পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা চলছে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ২

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা অব্যাহত আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা। গত ৮ জুন জেলার সন্দেশখালির ন্যাজাটে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এবার জেলার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ভাটপাড়ায় নিহত হলেন আরো দুজন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভাটপাড়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এই দুজন নিহত হন। তাঁরা হলেন রামবাবু সাউ ও ধরমবীর সাউ। দুজনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ সময় আহত হয়েছেন পাঁচজন। তবে আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। ঘটনার পর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ভাটপাড়ায় নতুন থানার উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের। কিন্তু তার আগেই সকাল সাড়ে ১০টায় ভাটপাড়া মোড়ে শ্রমিকদের বসতিতে বোমা হামলা শুরু হয়। এর পর থেকে বেলা যত গড়িয়েছে, বোমাবাজিও ততই বেড়েছে। লাগাতার বোমাবাজি, গুলি আর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের কারণে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপর্যায়ে ভাটপাড়ায় নামানো হয় ব়্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স।
ভাটপাড়ার পরিস্থিতি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য প্রশাসনিক ভবন নবান্নে মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিজিসহ রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভাটপাড়ায় অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে বহিরাগতরা। সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্থানীয় সমাজবিরোধীরা। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে এলাকা ছাড়তে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট, স্কুলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
গোটা ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনো দলীয় পরিচয় না দেখে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুন। তিন দিনের মধ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। কে কোন দল, সেটা দেখার প্রয়োজন নেই।