সংসদে আবার ‘তিন তালাক’, কংগ্রেসের বিরোধিতা

তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ভারতের লোকসভায় আজ শুক্রবার একটি নতুন বিল পেশ করা হয়। সংসদের উচ্চকক্ষে বাতিল হওয়া বিলটি আজ নতুন করে উপস্থাপিত করা হয় লোকসভায়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিজেপি পরিচালিত সাবেক জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট সরকার মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদে তাৎক্ষণিক তালাক বা তিন তালাকের বিষয়ে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। এই অধ্যাদেশকে প্রতিস্থাপন করে নতুন ‘মুসলিম নারী বিল’ (বিয়ে সুরক্ষা অধিকার) প্রস্তাব করা হয় আজ।
সংসদের অধিবেশনে তুমুল হট্টগোলের মাঝেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিলটি পেশ করেন। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর শুরুতেই এই বিল পেশের বিরোধিতা করে সরব হন। তবে বিরোধিতা ও বিরোধীদের হট্টগোলের মাঝেই সরকার বিল পেশ করে।
বিলটি পেশ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, মুসলিম নারীদের অধিকারকে সুরক্ষিত করা হবে। বিচার দেওয়া হবে এবং নারীদের ক্ষমতায়ন করা হবে।
এই আইন অনুযায়ী, কোনো মুসলিম পুরুষ তাঁর স্ত্রীকে তাৎক্ষণিকভাবে তিনবার তালাক বলে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটালে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। গত বছরের ডিসেম্বরে মুসলিম নারী বিল লোকসভা অনুমোদন করার পর তা রাজ্যসভায় বিরোধী দলের আপত্তির মুখে আটকে যায়। বিরোধী দলগুলো বিলে জামিনের বিধান রাখার কথা বলে। এ বিষয়ে পরবর্তী নীতিনির্ধারণের জন্য একটি কমিটি গঠনের দাবি জানায় তারা। তবে সরকার সে দাবি প্রত্যাখ্যান করে। ফলে গত মাসে ষোড়শ লোকসভা বিলোপের সঙ্গে সঙ্গে মুলতবি থাকা বিলটিও নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাৎক্ষণিকভাবে তিন তালাকের ‘অপরাধে’ কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলে আগের মতোই তা জামিন অযোগ্য থাকবে। তবে বিচার শুরু হওয়ার আগে ওই ব্যক্তি জামিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর ক্ষমতাবলে জামিন দিতে পারবেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট স্ত্রীর শুনানি নেওয়ার পরই কেবল তা প্রযোজ্য হবে। মৌখিক তালাকের কারণে স্বামীর তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে বিলে।
কংগ্রেসসহ প্রধান বিরোধী দলগুলো স্বামীর কারাদণ্ড বিধানের বিরোধিতা করেছে। সরকারের দাবি, এই বিল পাস হলে নারীরা সমঅধিকার পাবেন। উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর গত সপ্তাহে বলেন, লিঙ্গ সমতা এবং সরকারের ‘সবার সঙ্গ,সবার বিকাশ,সবার বিশ্বাস’ দর্শন মাথায় রেখেই এই বিল প্রস্তাবিত হচ্ছে।