জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বাড়ল

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার ভারতের লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রস্তাব দেন, জম্মু কাশ্মীরে আরো ছয় মাস রাষ্ট্রপতি শাসন রাখা উচিত। তারপরেই অনুষ্ঠিত হবে বিধানসভা নির্বাচন।
অমিত শাহর প্রস্তাব মেনে জম্মু কাশ্মীরে আরো ছয় মাস রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রাখার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কেন্দ্র। একইসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজও শুরু করছে কেন্দ্র।
অমিত শাহ জানান, চলতি বছরের শেষের দিকেই জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যা সমাধানেরও ইঙ্গিত দেন তিনি।
অমিত শাহ জানান, কেন্দ্র জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সীমান্তে বাঙ্কার নির্মাণ সম্পূর্ণ হবে।
জম্মু-কাশ্মীর রিজার্ভেশন অ্যাক্ট, ২০০৪ বিল প্রস্তাব করেছেন অমিত শাহ। এই বিলের আওতায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বসবাসকারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হবে। এই বিল পাস হলে রাজ্য সরকারি চাকরিতে আর্থিকভাবে দুর্বল যুবকদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে।
এদিকে জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে পিডিপিসহ ভারতের অন্য সব রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। যদিও জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হওয়ার ঘোষণায় কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে। ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পিডিপি পার্টির মেহবুবা মুফতি জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিজেপি মেহবুবা মুফতি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ায় ভেঙে যায় সরকার। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।
২০১৪ সালে পিডিপির সঙ্গে জোট করে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় সরকার গড়ে বিজেপি। ৮৭ আসনবিশিষ্ট জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ২০১৪ সালে পিডিপি পায় ২৮টি আসন। বিজেপি পায় ২৫টি আসন। এরপর বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে জম্মু-কাশ্মীরে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। কিন্তু সাড়ে চার বছরের মাথায় বিজেপি-পিডিপি মধুচন্দ্রিমা শেষ হয়ে যায়।
গত বছরের জুন মাসে পিডিপি সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় বিজেপি। এরপর জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক বিধানসভা ভেঙে দেন। তারপর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। সেই রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ ফের ছয় মাস বাড়াল এবার কেন্দ্র।