‘পরবর্তী টার্গেট পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর’

ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং মনে করেন পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মীরের অংশ ফিরিয়ে নিয়ে আসার কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার লোকসভায় তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, কাশ্মীরকে ৩৭০ ধারায় বাড়তি সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা দেওয়াটা চরম ভুল। ৩৭০ ধারার কারণে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় ভুল। গত ৭০ বছর ধরে সেই ভুল কার্যকর ছিল।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী টার্গেট হলো কীভাবে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মীর ভারতে দখলে নেওয়া যায় সেটা।’
কাশ্মীরকে ৩৭০ ধারায় বাড়তি সবিধা দেওয়ার জন্য ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দোষারোপ করেন তিনি। জিতেন্দ্র সিং মনে করেন, নেহরুর কারণে কাশ্মীর ইস্যু সমাধান করতে পারেননি সরদার বল্লভভাই প্যাটেল।
কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। ৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর অন্য যেকোনো ভারতীয় রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত। আর এ অনুচ্ছেদটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এর ভিত্তিতেই কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৩৭০ ভারতীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতা দেয়। এ ছাড়া পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়াদি, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দেয়।
সোমবার সংসদে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিরোধীদের তুমুল বাধা ও বাগবিতণ্ডার মধ্যে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
এ মর্মে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে, যাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ স্বাক্ষরও করেছেন।
এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মন্ত্রিসভার ওই বৈঠক শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
এই ৩৭০ অনুচ্ছেদের সুবাদে কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দারাই শুধু সেখানে বৈধভাবে জমি কিনতে পারতেন, সরকারি চাকরি করার সুযোগ পেতেন এবং সেখানে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতেন।
ওই অনুচ্ছেদ বিলোপের বিষয়টি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির পুরোনো রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোর একটি। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের ফলে সেখানে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।