কংগ্রেসের সভাপতি ‘আপাতত’ সোনিয়া গান্ধীই

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রসের সভাপতি পদে সোনিয়া গান্ধীকেই আবার ফিরতে হলো। ভারতীয় রাজনীতির সবচেয়ে পুরোনো দলটি নতুন সভাপতি নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ায় গান্ধী পরিবারের এই সদস্যকেই দায়িত্ব নিতে হয়েছে।
গতকাল শনিবার দিনভর রাজধানী নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে সোনিয়া গান্ধীর নামেই সিলমোহর দেওয়া হলো।
গত লোকসভা নির্বাচনে সারা ভারতে জাতীয় কংগ্রেসের বিপর্যয়ের দায় কাঁধে নিয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ ত্যাগ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পায় মোট ৫২টি আসন। ২০১৪ সালে তারা পেয়েছিল ৪৪টি আসন।
কিন্তু রাহুলের পদত্যাগের পর এক মাসেরও বেশি সময় কেটে গেলেও স্থায়ী সভাপতি খুঁজে পায়নি কংগ্রেস। যার ফলে শনিবার রাতে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক বৈঠকের পর স্থির হয়, যত দিন না কংগ্রেসের স্থায়ী সভাপতি কেউ হচ্ছেন, তত দিন দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন সোনিয়া গান্ধী।
সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে কংগ্রেসের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে গত লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধী। সেই সময় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি তাঁকে সর্বসম্মতভাবে ইস্তফা দিতে বিরত হতে বললেও তা শোনেননি রাহুল গান্ধী। তিনি সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার বিষয়ে অনড় থাকেন।
শনিবার রাতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে সোনিয়া গান্ধীকে বেছে নেওয়া হয়। ওয়ার্কিং কমিটির এ সিদ্ধান্ত মেনে নেন সোনিয়া গান্ধীও।
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘রাহুল গান্ধীর অভূতপূর্ব নেতৃত্বের জন্য তাঁর প্রশংসা করেছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। সভাপতি হিসেবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। প্রতিমুহূর্তে দেশের কৃষক, ছোট ব্যবসায়ী, সংখ্যালঘু নারী, আদিবাসী ও সমাজের গরিব মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছেন তিনি। ভারতের মাটিতে হিংসার পরিবেশের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসকে এক নতুন দিশা দেখিয়েছেন তিনি। সমাজের বঞ্চিত ও শোষিত মানুষদের আলো হয়ে উঠেছেন তিনি।’
শনিবার সকালে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে বসলেও সভাপতি বাছতে পারেনি। এরপর রাত ৮টায় আবার বৈঠকে বসে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি। নতুন সভাপতি বাছার জন্য ওয়ার্কিং কমিটিকে পাঁচটি ছোট কমিটিতে ভাঙা হয়। এরপর প্রতিটি কমিটিকে দলের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে কথা বলে রাত ৮টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সে সময় সভাপতির পদ নিয়ে আলোচনায় বৈঠক ছেড়ে চলে যান সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী।
তারপর কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে নাম উঠে আসে সোনিয়া গান্ধীর ঘনিষ্ঠ মুকুল ওয়াসনিক এবং মল্লিকার্জুন খাড়গের নামও। তবে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি চূড়ান্ত করতে পারেনি পরবর্তী স্থায়ী সভাপতির নাম। ফলে স্থগিত হয়ে যায় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। শেষমেশ সোনিয়া গান্ধীকে বেছে নেওয়া হয় কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে।