এখন কাশ্মীর থেকেও বউমা আনা যাবে : হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর রসিকতা

জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে দলীয় কর্মীদের গত সপ্তাহে ‘শৃঙ্খলা রক্ষার ক্লাস’ করিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এমন খবর জানিয়েছিল ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। অথচ তার পরেই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার রসিকতা করলেন কাশ্মীরি মেয়েদের নিয়ে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হরিয়ানার ফতেহাবাদে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মনোহর লাল খাট্টার মন্তব্য করেন, এবার হরিয়ানার ছেলেরাও কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করতে পারবেন। তাঁর এমন মন্তব্যে শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক। বিষয়টি চাপা দিতে মনোহর জানান, তিনি রসিকতা করেছেন মাত্র। এর আগে উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি বিধায়ক মন্তব্য করেছিলেন, দলীয় কর্মীরা এখন ‘সুন্দরী কাশ্মীরি নারী’ বিয়ে করতে পারবেন। এবার একই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করলেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীও।
শুক্রবারের জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে খাট্টার বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রী ধনকার মহোদয় বলতেন, রাজ্যে মেয়ের সংখ্যা কমে ছেলের সংখ্যা বেড়ে গেলে সমানুপাত আনতে বিহার থেকে বউমা আনব। জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ উঠে যাওয়ায় এবার সেখান থেকেও বউমা আনা যাবে। রসিকতা করেই বললাম। তবে নারী-পুরুষের সমানুপাত ঠিক থাকলে সমাজে ভারসাম্য বজায় থাকে।’
২০১৪ সালে হরিয়ানার অল্পবয়সী যুবকদের তৎকালীন বিজেপি নেতা ওপি ধনকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রাজ্যে নারীর সংখ্যা কমে গেলে বিহার থেকে তিনি বধূ আনবেন।
এ প্রসঙ্গে খাট্টার বলেন, ‘আমাদের রাজ্য নিয়ে অভিযোগ, এখানে কন্যা ভ্রুণ হত্যার ফলে নাকি নারীর সংখ্যা কমে গেছে। তার পরেই আমরা মেয়েশিশু বাঁচাতে পরিকল্পনা হাতে নিই। আগে রাজ্যে প্রতি এক হাজার পুরুষের অনুপাতে নারীর সংখ্যা ছিল ৮৫০। এখন সে অনুপাত বেড়ে হয়েছে ৯৩৩।’
এদিকে খাট্টারের এ মন্তব্যের পরেই মুখ খোলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়ে রাহুল বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বছরের পর বছর ধরে কী শিক্ষা দিয়েছে, এই হলো তার নমুনা। নারীরা পুরুষের সম্পত্তি নয়।’
এদিকে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের জবাবে খাট্টার টুইট করেন, ‘বিকৃত সংবাদ নিয়ে আপনার মতো একজন মানুষের এভাবে মতামত দেওয়া উচিত নয়। কোন প্রসঙ্গে কীভাবে কী বলেছি, তার একটি ভিডিও দিলাম। এটা আপনাকে পরিষ্কার ধারণা দেবে।’
Dear @RahulGandhi ji, at least at your level, you shouldn’t react on distorted news. I’m attaching the video of what I actually said, and In what context - this will give you clarity of mind. https://t.co/TCjhV0cuiO pic.twitter.com/GfD3SWlETI
— Manohar Lal (@mlkhattar) August 10, 2019
এর আগেও ধর্ষণ বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপাকে পড়েছিলেন খাট্টার। ২০১৮ সালের নভেম্বরে খাট্টার বলেছিলেন, অনেক মেয়েই ছেলেদের ধর্ষণের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অন্যায় সুযোগ নেয়। ৮০-৯০ শতাংশ ধর্ষণ ঘটে পরিচিতদের মধ্যেই। দীর্ঘদিন সম্পর্কের পর যখন পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য হয়, তখনই মেয়েরা তাদের নামে থানায় এফআইআর দায়ের করে বলে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।