‘জন্তুর মতো খাঁচাবন্দি কাশ্মীরিরা’

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা জাভেদ। তিনি বলেছেন, ‘আজ দেশের বাকি অংশগুলো ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করলেও, কাশ্মীরিরা জন্তুর মতো খাঁচাবন্দি হয়ে রয়েছেন এবং তারা মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’ গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কারণে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে বাড়িতে আটকে রেখেছে বলে ইলতিজা অভিযোগ করেছেন।
পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা জাভেদ তাঁর দ্বিতীয় ভয়েস মেসেজে অভিযোগ করেছেন যে তাঁর মা গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক দিন পরে তাঁকে তাঁর বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।
ইলতিজা জাভেদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়ে এও অভিযোগ করেন যে, তিনি যদি আবারও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তবে তাঁকে ‘ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
কাশ্মীর উপত্যকার তালাবন্দি পরিস্থিতি দ্বাদশ দিনে পড়ল আজ শুক্রবার। এখনও জম্মু ও কাশ্মীরের শীর্ষস্থানীয় মূলধারার রাজনৈতিক নেতারা গ্রেপ্তার অবস্থাতেই রয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে উপত্যকার দুজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহও রয়েছেন।
মেহবুবা মুফতির মেয়ে বলেন, তাঁর বাড়ির দরজা থেকে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা মানুষজনকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তাঁকেও বাড়ি থেকে এক পাও বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তাঁকে আটক করে রাখার কারণ জানতে চেয়েছেন ইলতিজা জাভেদ। কাশ্মীরে যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ থাকায় তিনি একটি ভয়েস নোটও প্রকাশ করেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার এবং এটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই এক রকম বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর।
ইলতিজা জাভেদ অডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে একজন অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে এবং আমি নিয়মিত নজরদারির মধ্যে রয়েছি। আমি অন্য যেসব কাশ্মীরিদের সঙ্গে কথা বলেছি তাদের সঙ্গে সঙ্গে আমারও প্রাণহানির ভয় রয়েছে।’
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লার পাশাপাশি গত রোববার মধ্যরাত থেকে গৃহবন্দি করে রাখা মেহবুবা মুফতিকে গ্রেপ্তার করে পরের দিন তাঁর শ্রীনগরের বাড়ি থেকে কাছের সরকারি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভারতীয় প্রশাসন সার্ভিসে (আইএএস) প্রথম হওয়া কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ ডা. শাহ ফয়সালকেও বুধবার দিল্লি বিমানবন্দরে আটক করে শ্রীনগরে ফেরত পাঠানো হয়, যেখানে তাঁকে জননিরাপত্তা আইনের আওতায় গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ওই রাজনৈতিক নেতাদের কবে মুক্তি দেওয়া হবে তা এখনও জানা যায়নি।
ব্ল্যাকআউটের অংশ হিসেবে, কাশ্মীর উপত্যকায় ফোন পরিষেবা এবং ইন্টারনেট সংযোগ স্থগিত রয়েছে এবং কারফিউয়ের মতো বিধিনিষেধ কার্যকর রয়েছে। শীর্ষ কর্মকর্তারা যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করছেন।
জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন জানিয়েছে যে কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞাগুলো পর্যায়ক্রমে সরানো হবে। পুলিশ বলেছে যে কাশ্মীরে আরো ‘কিছু সময়ের জন্য’ এই নিষেধাজ্ঞাগুলো চলবে।