কাশ্মীর নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের ফলাফল কী?

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গতকাল শুক্রবার ভারত অধিকৃত কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীন ও পাকিস্তানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর বিষয়ে আলোচনা হলো।
তবে এ আলোচনায় তেমন কোনো ফল আসেনি বলে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়। জাতিসংঘের একজন কূটনীতিকের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকের পর কাশ্মীর ইস্যুতে গণমাধ্যমকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়াকে পরিষদের ন্যূনতম কাজ হিসেবে দেখা হয়।
জাতিসংঘের ওই কূটনীতিক জানান, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর কোনো বিবৃতি দেওয়া হলে তা কাশ্মীরের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আরো বাড়িয়ে তুলবে মনে করে এর বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের একাংশ। আবার পরিষদের আরেকটি অংশ এই বৈঠক থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হলে তা হবে পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া— এমন ভাবনা থেকে বিবৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করে। এ ছাড়া বৈঠকে ফ্রান্স, জার্মানি ও জাতিসংঘ কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ নষ্ট হওয়াসহ পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে পারে— এমন ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধে মত দেয়।
জাতিসংঘের আরেকজন কূটনীতিক জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকেই কাশ্মীর ইস্যুতে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বৈঠকের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধি বলেন, ‘এ বৈঠক প্রমাণ করেছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জনগণের চিৎকার-ধ্বনি জাতিসংঘের কানে পৌঁছেছে।’
মালিহা লোধি দাবি করেন, এ বৈঠক প্রমাণ করে কাশ্মীর ইস্যু একটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্য। কাশ্মীর ইস্যুর একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, ‘কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের আন্তর্জাতিক কোনো পক্ষকে প্রয়োজন নেই।’
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই একতরফা পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত বলে মনে করে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।’
সম্প্রতি ভারত সরকার কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত বিশেষ ক্ষমতা বিলোপ করে। গত ৫ আগস্ট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয় এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে— জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ— ভাগ করার ঘোষণা করে।