বাধ্য হয়ে পুতুলের পা প্লাস্টার করলেন চিকিৎসক!

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে ১১ মাস বয়সী জিকরা মালিক। তার দুই পায়ে প্লাস্টার। দুই পা ওপরের দিকে রাখা। একই বিছানায় জিকরার পুতুল। পুতুলের নাম জিকরা দিয়েছে পরি। পরিরও দুই পা প্লাস্টার লাগানো। দুই পা ওপরের দিকে রাখা।
জিকরা ও পরির মধ্যে পা ভেঙেছে জিকরা। আর জিকরার চিকিৎসার জন্য পুতুল পরিকেও চলে যেতে হয় হাসপাতালের একই বিছানায়। শুধু তাই নয়, জিকরার পায়ে প্লাস্টার লাগানোর আগে পরির পায়ে লাগানো হয়। এই না হলে বন্ধুত্ব!
জিকরা ও পরি ভারতের দিল্লির বাসিন্দা। দুইজনই পায়ে প্লাস্টার লাগিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে দিল্লির লোকনায়ক হাসপাতালে।
কিন্তু খাট থেকে পড়ে পা ভেঙ্গে ছোট্ট জিকরাকে পরিকে ছাড়াই নয়া দিল্লির লোক নায়ক হাসপাতালে সম্প্রতি ভর্তি হতে হয়। মজার ব্যাপার হলো,পরিকে ছাড়া জিকরার চিকিৎসা করতে পারেননি কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, থাইয়ের হাড় ভেঙে গেলে জিকরার পা প্লাস্টার করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ছোট্ট জিকরা কিছুতেই তার পা প্লাস্টার করতে দেয়নি। পরে জিকরার মন ভোলাতে ওর বন্ধু পুতুল পরির পায়ে প্রথমে প্লাস্টার করে ট্রাকশন দেয় চিকিৎসক। প্রিয় বন্ধুর প্লাস্টার করা পা ঝোলানো দেখে আশ্বস্ত হয় জিকরা। এরপরেই সে পায়ে প্লাস্টার বাঁধতে দেয়। এখন হাসপাতালের বিছানায় পরির পাশাপাশি শুয়ে দিন কাটছে জিকরার। এখন সে আছে ফুরফরে মেজাজে। কোন ভয় নেই তার মনে। পরিকে নিয়ে হাসপাতালে আছে সে ভীষণ আনন্দে।
জিকরার মা ফারিন জানান, তাঁর ছোট্ট মেয়েটি অনেক চঞ্চল। বাড়িতে পাঁচ সেকেন্ডও চুপ করে বসে থাকে না সে। কিন্তু তার ভাঙা পা সোজা না রাখলে সেটা কোনো দিনও ঠিক হবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জিকরার পা প্লাস্টার করানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। সেখানে শুরুতেই বেগ পেতে হয় পরিবারকে। প্রথমত জিকরা হাসপাতালে আসতে মোটেও আগ্রহী ছিল না। নিয়ে আসার পরও কিছুতেই সে থাকবে না। শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে পরিকে হাসপাতালে আনা হয়। আর এই জাদু দিব্যি কাজ করতে শুরু করে। বন্ধু পরিকে পেয়ে এখন হাসপাতালে দারুন আছে সে।
জিকরার মায়ের মতে এই প্রথম কোন চিকিৎসক পুতুলের পা প্লাস্টার করেছেন। এতে অবশ্য চিকিৎসকদের কোন ক্ষোভ নেই। হাসিমুখে চিকিৎসা করছেন তাঁরা। হাসপাতালে জাকিরা এখন ‘গুড়িয়া ওয়ালি বাচ্চি’ নামে পরিচিত। সবাই এই নামেই মজা করে ডাকছে তাকে। আর এতে একদম বিরক্ত নয় ছোট্ট জিকরা বরং সে মনে মনে ভাবছে পাশে তো আমার বন্ধু আছেই।