‘বিশ্বস্ত স্বামী’ ও ‘মহাপ্রেমিক’ হোন : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের আন্তঃধর্মীয় বিয়েবিষয়ক একটি মামলা গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। জানা গেছে, ওই রাজ্যের এক হিন্দু নারী তাঁর মুসলমান প্রেমিককে সম্প্রতি বিয়ে করেন। পরে ওই বিয়েতে স্ত্রীর পরিবারের সম্মতি পাওয়ার জন্য হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন পুরুষটি।
এদিকে পুরুষটির ধর্মান্তরিত হওয়ার এ ঘটনায় আপত্তি জানায় ওই নারীর পরিবার। তাদের দাবি, গোটা বিষয়টি আসলে ওই পুরুষটির ভালোবাসার ভান, আর এভাবে নিজের ধর্ম পরিবর্তন করা অত্যন্ত লজ্জার।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘আমরা কেবল দম্পতির ভবিষ্যৎ নিয়েই উদ্বিগ্ন। আমরা আন্তঃধর্মীয় বা আন্তঃবর্ণ বিবাহের বিরোধী নই।’ এ বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই ব্যক্তির উচিত ‘বিশ্বস্ত স্বামী’ ও ‘মহাপ্রেমিক’ হওয়া। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রথম থেকেই হিন্দু-মুসলিম এই বিয়ের বিরোধিতা করে আসছিল ওই নারীর পরিবার। নারীটির বাবা অভিযোগ করেন, এটি আসলে তাঁর মেয়েকে ফাঁদে ফেলার একটা চাল। যদিও ভারতের শীর্ষ আদালত মেয়েটির বাবার ওই দাবি খারিজ করে তাঁকে একটি হলফনামা দাখিল করতে বলেছেন। এ ছাড়া আদালত নারীটির বাবাকে নবদম্পতিকে, অর্থাৎ তাঁর মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে তাঁদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য শুভকামনা জানাতে বলেছেন।
আর্য সমাজ মন্দিরে বিয়ের পরে ওই মুসলিম ব্যক্তি নিজের নাম পরিবর্তন করেন। এ ক্ষেত্রে নিজের নাম পরিবর্তনের জন্য তিনি যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন কি না, সে বিষয়েও আদালত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্ট আন্তঃবিশ্বাস ও আন্তঃজাতির নর-নারীর মধ্যে বিয়ের বিরুদ্ধে নয়।
আদালত বলেন, ‘আমরা কেবল চাই, মেয়েটির ভবিষ্যৎ যেন সুরক্ষিত থাকে।’ যদিও ওই নারীর বাবার আইনি পরামর্শদাতা জানিয়েছেন, নারীটির কোনো ধরনের সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের জবাব জানতে চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।