এটা তো ট্রেলার ছিল, সিনেমা এখনো বাকি : মোদি

ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ১০০ দিন পূর্তি নিয়ে বলতে গিয়ে বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের একটি ছবির বিখ্যাত সংলাপের অনুকরণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বললেন, গত ১০০ দিনে তাঁর সরকার যা করেছে, তা ছিল কেবল ‘ট্রেলার, এখনো সিনেমা বাকি রয়েছে’। খবর এনডিটিভির।
ঝাড়খন্ডের রাঁচিতে নির্বাচনী প্রচারে গতকাল বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমি একটি শক্তিশালী ও কর্মমুখী সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম... একটা সরকার, যা আগের চেয়ে আরো গতিশীল, যে সরকার আপনাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য লড়াই করবে। আমাদের সরকারের ১০০ দিন কেবল ট্রেলার ছিল, পুরো ফিল্ম এখনো বাকি আছে।’
জনসভায় মোদি দাবি করেন, ‘আমাদের সংকল্প, যারা দেশকে লুটেছে, উন্নয়ন স্তব্ধ করেছে, তারা যেন উচিত শাস্তি পায়। এই সরকারের আগে কখনো এত দ্রুতগতিতে দেশে উন্নয়ন হয়নি।’
মোদি আরো বলেন, ‘একই সময়ে দুর্নীতির ওপর আঘাত শুরু হয়েছে। যারা মানুষকে লুটের চেষ্টা করেছে, তাদের সঠিক জায়গায় পাঠানো হবে।’
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে মোদি সরকার দ্রুততার সঙ্গে একের পর এক বিল পাস করিয়েছে। ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম কয়েক সপ্তাহেই বিতর্কিত তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল, তথ্য জানার অধিকার আইনের বিলসহ একাধিক বহুল আলোচিত বিল কোনো বিরোধিতা ছাড়াই পাস করিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের স্বাধীনতার সময় থেকে চলে আসা সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার এখন পর্যন্ত মোদি সরকারের অন্যতম বড় পদক্ষেপ বলে বিবেচিত। গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর পাশাপাশি রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে।
তবে বিরোধীরা মোদি সরকারের এই ১০০ দিনের সাফল্য মানতে নারাজ। তাদের মতে, মন্দায় ধুঁকছে ভারত। ক্ষমতার ১০০ দিনে বিজেপির কার্যকলাপকে অন্যভাবেই দেখছে বিরোধী দল কংগ্রেস। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় মেয়াদে বিজেপি সরকারের প্রথম ১০০ দিনকে তিনটি শব্দে বর্ণনা করা যায়—‘স্বৈরাচারিতা, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য’।
ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের এপ্রিল, মে ও জুন—এই তিন মাসে জিডিপি ছিল ৮ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরে কমে হয় ৫ শতাংশ। এর আগের তিন মাসে, অর্থাৎ ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চে ভারতের জিডিপি ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম ভারতের জিডিপি এত কম। ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮-এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের জিডিপি এভাবে কমার পেছনে একাধিক কারণ তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই উৎপাদন কমেছে। চাহিদা না থাকায় বাজারের অবস্থা বেহাল। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগেরও আকাল দেখা দিয়েছে। যার পরিণতিতে অর্থনীতি ঝিমোচ্ছে, জিডিপিও তলানিতে। অটোমোবাইল সেক্টর থেকে প্রতিটি শিল্পক্ষেত্রে চাকরি থেকে কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের মাধ্যমে সব দলের সঙ্গে আলোচনা না করারও অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়েও সরকারের অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করে আসছে বিরোধী দলগুলো।