সবাই জানে ব্যাপারটা ওপেন সিক্রেট : বিজেপি

আগামীকাল বুধবার দিল্লিতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে তির্যক মন্তব্য করার সুযোগ হাতছাড়া করছে না ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এটা আসলে সুবিধাবাদী রাজনীতির সর্বোত্তম উদাহরণ, বলছে বিজেপি নেতারা।
পাশাপাশি রাজধানীতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিজে থেকেই তৃণমূল নেত্রীর এই সাক্ষাতের চেষ্টার বিষয়টিকে নিজেকে সিবিআইর খপ্পর থেকে বাঁচানোর মরিয়া প্রচেষ্টা বলে কটাক্ষ করছে বিজেপি।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই বৈঠকের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। এরপরেই রাজ্য সচিবালয় জানায়, আগামী বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দিল্লিতে গিয়ে সাক্ষাৎ করবেন।
মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে তৃণমূল নেত্রীর এই আগ্রহকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি যে, লোকসভা নির্বাচনের সময় এবং তারপরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) কী ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছিলেন। তিনি কখনো ফেডারেল কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধা রাখেননি এবং এমনকি তিনি এ কথাও বলেছিলেন যে তিনি অনুভব করেন না যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিজিকে সম্মান করা দরকার।’
‘আর এখন হঠাৎ কেন এবং কী কারণে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন, তা একেবারেই ওপেন সিক্রেট। এর মাধ্যমে তিনি যে আসলে একজন সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ, তাও বোঝা যাচ্ছে। এটা প্রমাণিত যে, তিনি তাঁর উদ্দেশ্য পূরণ করতে যেকোনো দূরত্ব পর্যন্ত যেতে পারেন এবং কাজ উদ্ধার হয়ে গেলেই তা ভুলে যেতে পারেন,’ বলেন রাহুল সিনহা।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির অপর এক প্রবীণ নেতা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে এবং তাঁর দলের নেতাদের সিবিআইর খপ্পর থেকে বাঁচাতে দিল্লিতে যাচ্ছেন। কেননা বাংলার বহু কোটি চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত করছে সিবিআই।
ওই নেতা আরো বলেন, এটি সবার কাছেই স্পষ্ট যে, তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এবং তাঁর দল তৃণমূলের নেতারা সিবিআইর হাতে যাতে না আসেন, সে জন্য তিনি একটি ব্যক্তিগত আবেদন করতেই দিল্লি যাচ্ছেন। তবে তাঁর উদ্দেশ্য সফল হবে না। আমাদের দলের হাইকমান্ড দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে কখনো আপস করবে না। যাঁরা জনসাধারণের অর্থ লুট করেছেন, তাঁদের সকলকেই জেলে যেতে হবে।
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিজেপির এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে বলেছে যে, রাজ্যের উন্নয়নমূলক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার বিষয়টি একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধিকারের মধ্যেই পড়ে।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতাদের ভিত্তিহীন এই দাবি বন্ধ করা উচিত। ফেডারেল কাঠামোয় একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অধিকার রয়েছে। প্রস্তাবিত বৈঠকটি রাজ্যের উন্নয়নমূলক বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত, বলেন তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা।