ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবাঞ্ছিত মৃত্যু কাম্য নয় : বিএসএফ

বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স-এর আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) যোগেশ বাহাদুর খুরানিয়া বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মানুষের অবাঞ্ছিত মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা অবাঞ্ছিত মৃত্যু সমর্থন করি না। এ বিষয়ে সীমান্তের প্রতিটি বিএসএফের জওয়ানকে বার্তা পাঠানো হয়েছে।’
গত রোববার কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে খুরানিয়া বলেন, ‘আমরা সীমান্তে নন-লিখাল ওয়েপন ব্যবহার করছি। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করছি। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রতিটি সদস্য মারণাস্ত্র নয় এমন অস্ত্র ব্যাবহারে অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। লিখাল ওয়েপন (মারণাস্ত্র) তখনই ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যখন আর কোনো উপায় থাকে না। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা লিখাল ওয়েপন শুধু আত্মরক্ষার জন্যই ব্যবহার করে থাকেন। তবে যখনই কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, সেটা খুবই দুঃখজনক। সেক্ষেত্রে বিএসএফের নিজস্ব আদালতই নয়, স্থানীয় পুলিশও তদন্ত করে।’
গত ৩ অক্টোবর থেকে ৬ অক্টোবর-চার দিন ধরে কলকাতায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আইজি পর্যায়ের বৈঠকে বিভিন্ন ধরনের আলোচনার পর এদিন সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন খুরানিয়া। অন্যদিকে ১০ সদস্যের বিজিবির প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) অতিরিক্ত ডিজি, আঞ্চলিক কমান্ডার (দক্ষিণবঙ্গ, যশোর) মোহম্মদ জালাল গনি খান। দুই বাহিনীর আইজিরা এ সম্পর্কিত একটি সমঝোতাও বিনিময় করেন।
খুরানিয়া জানান, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর মানুষের অবাঞ্ছিত মৃত্যু, গবাদি পশু, মাদক দ্রব্য, অস্ত্র, জাল নোট পাচার রোধসহ যেকোনো ধরনের সীমান্ত নাশকতা ঠেকানোর ব্যাপারে আলোচনা করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সেই সঙ্গে নিয়মিত ব্যবধানে টহলদারি, গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ ও অপরাধপ্রবণ সীমান্ত এলাকা চিহ্নিত করা এবং দুই বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক করার ব্যাপারেও আলোচনা হয় চারদিনের বৈঠকে। আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলেও আখ্যায়িত করেন খুরানিয়া।
অন্যদিকে, বৈঠককে ফলপ্রসূ আখ্যা দিয়েও বিজিবির পক্ষ থেকে মোহম্মদ জালাল গনি খান জানান, ‘বিজিবির তরফে মাদক পাচার রোধ, মানুষ হত্যার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। বিএসএফর তরফে গরু পাচার রোধের বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। তার অভিযোগ ‘নির্বিচারে গুলি চালানোর ফলে এই হত্যার ঘটনা ঘটছে। কোথাও আত্মরক্ষার কথা বলেও গুলি চালানো হচ্ছে। এই মৃত্যু শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার ব্যাপারে কথা হয়েছে।’
গবাদিপশু পাচার রোধে জালাল গনি খান বলেন, গরু পাচারের উৎস খুঁজে বের করে সেটিকে নষ্ট করার একটা প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে বিএসএফের পক্ষ থেকে। গত সাত মাসে গরু পাচার ৪০ শতাংশ কমে গেছে। আগামী দিনে এটি আরো কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় গরু পাচার করার ফলে সে দেশের গবাদি ফার্মগুলো লাভজনক হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন জালাল। আমাদের তরফে গরু পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রদান করা হচ্ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে যারা এই পাচারের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।