ভারতে ‘ভালুকের জননাঙ্গখেকো’ বাঘ পাচারকারী আটক

ছয় বছর আগে হঠাৎ করেই এক অদ্ভুত বিষয়ের মুখোমুখি হন ভারতের বন্যপ্রাণীবিষয়ক কর্মকর্তারা। বেশ কয়েকটি ভালুককে প্রজনন অঙ্গবিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। পরে জানা যায়, মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে এমন এক বাঘ পাচারকারী রয়েছে, যার কি না আছে ভালুকের লিঙ্গ খাওয়ার অদ্ভুত এক নেশা।
এরপরই ওই পাচারকারীকে ধরতে উঠেপড়ে লাগেন বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা। ২০১৩ সালে গঠন করা হয় বিশেষ টাস্কফোর্স। তাকে রাখা হয় ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আসামির তালিকায়। কিন্তু কোনোভাবেই খোঁজ মিলছিল না ওই পাচারকারীর। শেষ পর্যন্ত গুজরাট রাজ্য থেকে গত ১৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
ওই বাঘ পাচারকারীর নাম ইয়ারলেন। সে এমন এক সম্প্রদায়ের, যাদের ধারণা, ভালুকের প্রজনন অঙ্গ পুরুষত্বহীনতাসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে।
এরই মধ্যে ইয়ারলেন স্বীকার করেছে বাঘ-ভালুকসহ শত শত শূকর ও ময়ূর হত্যা করেছে সে।
মধ্যপ্রদেশের বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কিছু ব্যবসায়ীর নির্দেশে ইয়ারলেন ভালুকের পিত্তথলি সংগ্রহ করত। ভালুকের পিত্তথলিকে মূল্যবান মনে করতেন ওই ব্যবসায়ীরা।
ইয়ারলেনকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে নকল ভোটার আইডি জব্দ করা হয়। জানা যায়, বিভিন্ন সময় সে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে আসছিল। সম্প্রতি যশরাজ নাম ব্যবহার করে গুজরাটে এসেছিল সে।
১৫ বছর বয়স থেকে শিকার করতে শুরু করে ইয়ারলেন। তার পর থেকেই বহু সংখ্যক বাঘ, ভালুক, শূকর, ময়ূরসহ অনেক বন্যপ্রাণী হত্যা করছে সে।
জানা গেছে, কালোবাজারে ভালুকের প্রজনন অঙ্গ ও পিত্তথলির বেশ চাহিদা রয়েছে। ইয়ারলেন এসব অঙ্গ ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করত। তবে তা কেবল ভারতের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল না। এসব ব্যাপারে জানতে এরই মধ্যে ইয়ারলেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।