জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছে ইইউ প্রতিনিধিদল

ভারতের জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর এই প্রথমবার কোনো বিদেশি প্রতিনিধিদল হিমালয়ের উপত্যকায় যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ মঙ্গলবার সকালেই জম্মু-কাশ্মীরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
বিদেশি প্রতিনিধিদল জম্মু-কাশ্মীরে রওনা হতেই কাশ্মীর নিয়ে আবারও উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করছে। জম্মু-কাশ্মীরের সামগ্রিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীরা।
চলতি বছরের ৫ আগস্টের পর উপত্যকায় এই প্রথম কোনো বিদেশি প্রতিনিধিদল ঢুকছে। মূলত জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর থমথমে পরিস্থিতি কাশ্মীরজুড়ে। টানা ৮৪ দিন ধরে কার্যত বিভিন্ন বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে কাশ্মীরকে। বারবার প্রশ্ন উঠেছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর কেমন আছে কাশ্মীর? আর সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজ কাশ্মীরে যাচ্ছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা।
কাশ্মীর কেমন আছে সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য নাথান গিল জানিয়েছেন, কাশ্মীরের পরিস্থিতি চাক্ষুষ করতেই যাচ্ছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কাশ্মীরের পথে রওনা দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল।
এর আগে গতকাল সোমবার দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদের কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি তাঁদের পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদ তথা বিচ্ছিন্নতাবাদ সম্পর্কে জানান। পাশাপাশি অজিত দোভাল জানান, কেন ভারত জম্মু-কাশ্মীর থেকে লাদাখকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা প্রদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল কাশ্মীরে আসার আগের দিনই জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর গ্রেনেড ছুড়েছে জঙ্গিরা। ঘটনার জেরে জখম হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। যাঁদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলা জেলার সোপোর এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো সোমবার দুপুরেও সোপোর এলাকার বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীরা। সে সময় আচমকা তাঁদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা। ঘটনার জেরে কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজন সাধারণ নাগরিক রয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পরই গোটা এলাকাজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। সোমবার রাত পর্যন্ত জঙ্গিদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও এ গোটা ঘটনায় কাশ্মীর পুলিশের পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, জঙ্গিরা সোপোর বাসস্ট্যান্ডে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ছয়জন সাধারণ নাগরিকের জখম হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গত ২৬ অক্টোবর শ্রীনগরের করননগর পুলিশ স্টেশনে গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। সে ঘটনায় ছয়জন ভারতীয় সিআরপিএফ জওয়ান জখম হন। সে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে সোমবার ফের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটল।