‘আমি আর কার্টুন দেখতে পারব না,’ কাশ্মীরি শিশুর আর্তনাদ

‘টিভিতে কার্টুন দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে খেলা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই পড়া—এ সবই এখন আমার স্বপ্ন।’ পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া নয় বছর বয়সী কাশ্মীরি শিশু আসিফ আহমেদ শেখ আক্ষেপ নিয়ে এমনটিই বলছিল।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী উলফাত হামিদ (১৭) বলেন, ‘গ্রামের মেয়েদের সেলাই ও টেইলারিং শেখাতাম আমি। কিন্তু চোটের কারণে এখন আর পারছি না। আমি দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারিনি।’
বিল্লাল আহমেদ (১৭) নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শ্রীনগরের হাসপাতালে যাওয়ার পর ডাক্তাররা আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কারণ, সেখানে এত মানুষ ছিল যে আর কারো জায়গা হচ্ছিল না।’
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এক প্রতিবেদনে জানায়, এই তিন শিশুই ভারতীয় সেনাদের প্যালেট-গানের গুলিতে অন্ধ হয়ে গেছে। তারা এখন নিজেদের স্বাভাবিক কাজ করতে পারছে না। শুধু এই তিনজনই নয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে শত শত কাশ্মীরি বাসিন্দা অন্ধ হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় সেনাদের গুলিতে অন্ধ হওয়া কাশ্মীরিদের ছবি নিয়ে ১০৯ পৃষ্ঠার একটি বই প্রকাশ করেছে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
কাশ্মীরিদের প্রতি ভারতের নিষ্ঠুর আচরণের চিত্র বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
এরই মধ্যে কাশ্মীরিদের ওপর ভারতীয় সেনাদের এমন নিষ্ঠুরতা নিয়ে বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আর অন্ধ হয়ে যাওয়া শিশুদের ছবি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে সারা বিশ্বে। এতে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে অনেকেই।
ভারত অবশ্য বারবার বলে আসছে, তারা কাশ্মীরে কোনো ধরনের উগ্রতা দেখায়নি। বরং সেখানে তারা যথেষ্ট শান্ত হয়ে কাজ করেছে বলে দাবি করছে। যদিও এই দাবি সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।