নারদ নিউজের দ্বিতীয় ভিডিও ফাঁস

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের ঘুষ নেওয়ার আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করেছে নারদ নিউজ। এর আগেও ওই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্টিং অপরেশনে ১২ তৃণমূল নেতা ও দলটি ঘনিষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশ করে। প্রথমটির রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় ভিডিও প্রকাশ পেল।
জানা গেছে, দ্বিতীয় ভিডিওতে তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা এবং আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরুপা পোদ্দারের ঘুষ নেওয়া দেখানো হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শঙ্কুদেব পন্ডা ঘুষের অংশ চাইছেন। তিনি ওই ঘুষের অংশ বেনামে নেবেন বলে জানান। ভিডিওতে অপরুপা পোদ্দারকে নিজ হাতে এক লাখ টাকা নিতে দেখা গেছে। ওই টাকা নেওয়ার জন্য তিনি কালো ব্যাগ ব্যবহার করেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভিডিওটি প্রকাশ পেতেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়।
গত সপ্তাহে নারদ নিউজ তাদের প্রথম ভিডিও ফাঁস করে, যেখানে তৃণমূলের অন্যতম নেতা মুকুল রায় থেকে শুর করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ঘুষ নিতে দেখা যায়। ওই ভিডিও নিয়ে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে বিরোধীরা। সেই চাপ সামলে উঠতে না উঠতেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিকে উত্তাল করে ফের প্রকাশ পেল নারদ নিউজের দ্বিতীয় ভিডিও। নারদ নিউজের যাবতীয় ভিডিওকে মিথ্যা ও কুৎস প্রচার বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। বিস্ফোরক ওই ভিডিওকে হাতিয়ার করে পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস একযোগে তৃণমূলকে আক্রমণ করার পথে হাঁটতে শুরু করেছে। আর নারদ নিউজের সিইও ম্যাথু স্যামুয়েল দাবি করেছেন, তার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও শতভাগ সত্য।
নারদ নিউজের প্রথম ভিডিও প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার নারদ নিউজকে আইনি নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, নারদ নিউজের ঘুষ কাণ্ডে সিবিআই চেয়ে গত ১৬ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। আইনজীবী অক্ষয় সারেঙ্গি মামলা রুজু করে তাঁর আবেদনে আদালতকে বলেন, নারদ নিউজের স্টিং অপরেশনে জড়িতরা প্রভাবশালী ব্যাক্তি। ফলে গুরুতর ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশ দ্বারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে যেন সিবিআইয়ের হাতে তদন্তের ভার দেওয়া হয়।
কংগ্রেসের পক্ষে অমিতাভ চক্রবর্তী তাঁর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় দাবি করেছেন, নারদ নিউজের ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে ফুটেজ ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হোক। সেইসঙ্গে অভিযুক্ত তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিক আদালত। এমনকি অভিযুক্তরা যাতে কোনো নির্বাচনে আর কোনোভাবেই প্রার্থী হতে না পারে তার গ্যারান্টিও তিনি দাবি করেছেন। বিজেপির তরফে রাজেশ ঝাঁ তাঁর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় আবেদন করেছেন, এই ভিডিও কেলেঙ্কারিতে জড়িত তৃণমূল নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে সিবিআই অথবা ইডির (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) কাছে তদন্তের ভার দেওয়া হোক।