লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল নিয়ন্ত্রণে দমকলকর্মীদের বড় সাফল্য
লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তরাঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নতুন দাবানলের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছে দমকলকর্মীরা।
আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তরাঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নতুন দাবানলের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছে দমকলকর্মীরা। এদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউজম আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের জন্য ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কি.মি.) উত্তরে গত বুধবার ‘হিউজ ফায়ার’ শুরু হয়, যখন জরুরি পরিষেবাগুলো শহরের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের আরও দুটি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। এই দুটি আগুন দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জ্বলছে।
হিউজ ফায়ার পরিস্থিতি
‘হিউজ ফায়ার’ দ্রুত প্রায় ১০ হাজার ১৭৬ একর (৪১ বর্গকিলোমিটার) এলাকা পুড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দিনভর দমকলকর্মীদের চার হাজার জনের একটি দল আকাশ থেকে পানি ও রাসায়নিক স্প্রে করে এবং মাটিতে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও হোসপাইপ ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশন জানিয়েছে, আগুনের নিয়ন্ত্রণের হার ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
এই দাবানলের কারণে ৩১ হাজার বাসিন্দাকে বাধ্যতামূলকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং আরও ১৬ হাজার জনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সান্তা ক্ল্যারিটার কাছে ক্যাসটেইক লেক এলাকার পাহাড়ি ভূখণ্ডে ধোঁয়ার মেঘ ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত দমকলকর্মীদের শক্তিশালী বাতাস এবং নিম্ন আর্দ্রতার সঙ্গে লড়াই করতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে বৃষ্টি এবং পর্বতাঞ্চলে তুষারপাতের পূর্বাভাস রয়েছে, যা কিছুটা স্বস্তি আনতে পারে। তবে বৃষ্টির কারণে কাদা ধসের ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন ব্যাস।
মহানগর এলাকায় ইটন ও প্যালিসেডস দাবানল ১৭তম দিনে পুড়ছে। ইতোমধ্যে ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং প্রায় ১৬ হাজার স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। ইটন ফায়ার ৯৫ শতাংশ এবং প্যালিসেডস ফায়ার ৭২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে ।
ছোট ছোট দাবানলও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যেমন সেপুলভেডা ফায়ার, যা বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হয় এবং ৪০৫ ফ্রিওয়ের পাশ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই আগুন ৪৫ একর এলাকা জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং ৬০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার দ্বিদলীয় সহায়তা প্যাকেজটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্যালিফোর্নিয়া সফরের আগেই ঘোষণা করেন নিউজম। ট্রাম্প আজ শুক্রবার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন।
নিউজম বলেছেন, এই তহবিল উদ্ধার কার্যক্রম, ধ্বংসাবশেষ অপসারণ এবং অন্যান্য পুনর্গঠন কাজে ব্যবহার করা হবে। তবে এই বিপর্যয়ের জন্য আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেডারেল সহায়তা প্রয়োজন হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ট্রাম্প গত বুধবার এক সাক্ষাৎকারে ক্যালিফোর্নিয়ার পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করেন এবং হুমকি দেন, পানি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন না হলে ফেডারেল সহায়তা বন্ধ করা হবে।
নিউজম এই দাবিকে ‘ভুল তথ্য’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘পানি প্রকল্পগুলোর সঙ্গে অগ্নিনির্বাপণের কোনো সম্পর্ক নেই।’