পুলিৎজার পুরস্কার পেলেন ফিলিস্তিনি লেখক

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলপন্থি বিভিন্ন গোষ্ঠীর নির্বাসনের হুমকির মুখেও মর্যাদাপূর্ণ পুলিৎজার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ফিলিস্তিনি কবি মোসাব আবু তোহা। সোমবার (৫ মে) নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার ‘শারীরিক ও মানসিক ধ্বংসযজ্ঞ’ নিয়ে লেখা তার মর্মস্পর্শী প্রবন্ধের জন্য এই সম্মাননা লাভ করেন। খবর আল জাজিরার।
পুলিৎজার কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, আবু তোহার প্রবন্ধগুলোতে গভীর অনুসন্ধানের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতির অন্তরঙ্গতা মিশে যুদ্ধকালীন ফিলিস্তিনিদের অভিজ্ঞতা অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
পুরস্কার জয়ের পর সামাজিক মাধ্যমে এক সংক্ষিপ্ত পোস্টে আবু তোহা লেখেন, ‘এইমাত্র আমি ‘কমেন্টারি’ বিভাগে পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছি। এটি আশা জাগাক। এটি একটি গল্প হোক।’ তার এই মন্তব্যটি সম্ভবত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরেক ফিলিস্তিনি কবি রিফাত আলারিরের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য, যাঁর শেষ কবিতার শিরোনাম ছিল ‘যদি আমার মৃত্যু হয়, তবে তা একটি গল্প হোক।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় আবু তোহাকে আটক করেছিল। পরে তিনি মিশরে মুক্তি পান এবং সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন।
নিউ ইয়র্কারে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে আবু তোহা তার হারানো স্মৃতি এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বেঁচে থাকা মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, ‘গত বছর, আমি আমার স্মৃতির অনেক স্পর্শগ্রাহী অংশ হারিয়েছি – সেই মানুষ, স্থান ও জিনিস যা আমাকে মনে রাখতে সাহায্য করত। গাজায়, প্রতিটি ধ্বংস হওয়া বাড়ি এক ধরনের অ্যালবামে পরিণত হয়েছে, যা ছবিতে ভরা নয় বরং বাস্তব মানুষে পূর্ণ, মৃতরা যেন এর পাতাগুলির মধ্যে চাপা পড়ে আছে।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসরায়েলের সমালোচক অ-নাগরিকদের ওপর কঠোর অভিযানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু ডানপন্থি গোষ্ঠী আবু তোহাকে নির্বাসিত করার দাবি জানিয়েছিল। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে লেখক সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বনির্ধারিত বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান বাতিলও করেছিলেন। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি উপেক্ষা করে পুলিৎজার জয় আবু তোহার লেখনীর গভীরতা ও তাৎপর্যকেই তুলে ধরে।