ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে কোন পথ বেছে নেবে রাশিয়া?

গত সপ্তাহে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলের হামলা চালানোর পরপরই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে রাশিয়া। ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘একটি সার্বভৌম জাতিসংঘ সদস্যরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উস্কানিবিহীন সামরিক হামলা’ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে মস্কো। তবুও প্রশ্ন থাকছে, ভবিষ্যতে সংঘাত আরও বৃদ্ধি পেলে কোন পথে হাঁটবে রাশিয়া। খবর আলজাজিরার।
ইরান ও রাশিয়া উভয়ই সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। সিরিয়ার যুদ্ধে আসাদের পক্ষে হস্তক্ষেপ করেছিল তারা। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে শাহেদ কামিকাজে ড্রোন সরবরাহ করেছে ইরান। এছাড়া গত বছর ইরান থেকে স্বল্প পাল্লার নির্ভুল শত শত ফাথ-৩৬০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েছিল রাশিয়া– এমন খবর রয়েছে।
তবে কিছু বিশ্লেষক বলছেন, রাশিয়া ইরানের প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও, তাদের সম্পর্কের মাত্রা অতিরঞ্জিত করা উচিত নয়।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, ইরান ও ইসরায়েল উভয় দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখছে রাশিয়া। প্রয়োজনে দেশটি তাদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত।
এরপর তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা অনিচ্ছা দেখছি, অন্তত ইসরায়েলের পক্ষ থেকে, কোনো মধ্যস্থতার পরিষেবা গ্রহণ করতে বা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে হাঁটতে।
মস্কো স্টেট ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের সহকারী অধ্যাপক নিকোলে সুরকভ আল জাজিরাকে বলেন, এটি একটি খুব কঠিন ভারসাম্যপূর্ণ খেলা যা রাশিয়া খেলার চেষ্টা করছে। রাশিয়া আন্তরিকভাবে এক ধরনের রাজনৈতিক সমাধান অর্জনের চেষ্টা করছে।

এখন পর্যন্ত এ সংঘাতে দুটি ব্যবস্থা নিয়েছে রাশিয়া। এক. ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে। দুই নম্বরে সংঘাত নিরসনে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে ইরান ও ইসরায়েল উভয় দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইরানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়লেও ইসরায়েলের সঙ্গেও রাশিয়ার বহু বছর ধরে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ফলে চ্যালেঞ্জিং হলেও একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখতে চেষ্টা করবে দেশিটি। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া কীভাবে তার কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে সংঘাত নিরসনে ভূমিকা রাখে, নাকি শুধু এক পক্ষের প্রতি সমর্থন বজায় রাখে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।