হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ রাখতে নাগরিকদের নির্দেশ ইরানের
ইরান সরকার নাগরিকদের হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও অন্যান্য ‘অবস্থান-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন’ ব্যবহার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরআইবি জানিয়েছে, সরকার দাবি করছে—এই অ্যাপগুলো ‘ব্যক্তিদের শনাক্ত ও লক্ষ্যবস্তু করার প্রধান পদ্ধতি’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইরানের এই সতর্কবার্তায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। মঙ্গলবার (১৭ জুন) কোম্পানিটির একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা উদ্বিগ্ন—এই মিথ্যা প্রতিবেদনগুলো এমন একটি অজুহাত হতে পারে, যেখানে মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, এমন সময়ে আমাদের পরিষেবাগুলো ব্লক করা হবে।’
হোয়াটসঅ্যাপ জোর দিয়ে বলেছে, তারা ব্যবহারকারীদের সঠিক অবস্থান ট্র্যাক করে না ও তাদের প্ল্যাটফর্মে পাঠানো সমস্ত বার্তা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড থাকে।
মুখপাত্র ব্যাখ্যা করেন, ‘প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ সেই বার্তাগুলোতে অ্যাক্সেস করতে পারে না, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপও নয়।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা আপনার সঠিক অবস্থান ট্র্যাক করি না, আমরা প্রত্যেকে কাকে বার্তা পাঠাচ্ছে তার লগ রাখি না। লোকেরা একে অপরকে যে ব্যক্তিগত বার্তা পাঠাচ্ছে তা আমরা ট্র্যাক করি না।’
হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, তারা ‘কোনো সরকারকে বাল্ক তথ্য সরবরাহ করে না।’
এই ঘটনা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাতের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও তথ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোরে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি ও ইসলামিক রেভ্যুলিউশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলা করা হয় ইসরায়েলে। এরপর থেকে দুই পক্ষই একে অপরের ওপরে হামলা অব্যাহত রেখেছে।