মার্কিন শুল্কারোপের পর ভারতের বিকল্প বাজার খুঁজছে প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডগুলো

ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্কারোপের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত ব্র্যান্ড হাউসগুলো তাদের ভারতীয় বস্ত্রখাত রপ্তানি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। ভারতের বেশ কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এনডিটিভি প্রোফিটকে শুক্রবার (৮ আগস্ট) এই তথ্য দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র হলো ভারতের বস্ত্র ও পোশাকশিল্পের প্রধান রপ্তানি বাজার। ভারত প্রতিবছর মার্কিন বাজারে তার মোট বস্ত্র রপ্তানির ২৮ শতাংশ পণ্য রপ্তানি করে; যার আর্থিক পরিমাণ ৩৬.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মার্কিন উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণে ভারতের পণ্যের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর ফলে মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের সরবরাহ ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে লোকসান হতে পারে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার।
এ বিষয়ে ভারতের গোকলদাস এক্সপোর্ট ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এনডিটিভি প্রোফিটকে জানিয়েছে, কম শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এমন অঞ্চলে যদি আমাদের কোনো সক্ষমতা থাকে তবে সেসব অঞ্চলে বিকল্প খুঁজে বের করার জন্য মার্কিন ব্র্যান্ডগুলো আমাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারতের তামিল নাড়ুর তিরূপপুর ভিত্তিক একটি বৈশ্বিক পোশাক নির্মাণ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তাদের খদ্দেররা ৮০ হাজার ডলারের টি-শার্ট ও সুতি পোশাকের শিপমেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছে যে, খদ্দেরদের জন্য অতিরিক্ত মূল্য প্রদান করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যবসায়ী জানান, মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো চাইছে আমরা যেন দাম কমিয়ে রাখি।
কিছু রপ্তানিকারক বলছে, অতিরিক্ত পণ্য জমে যাওয়ার কারণে তারা কিছুটা ছাড় দিতে পারে।
ভারত বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। সম্প্রতি ভারতের পণ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্কারোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতারা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। এসব দেশে মার্কিন শুল্কারোপের পরিমাণ ২০ শতাংশ।

এ বিষয়ে ভারতের বস্ত্র প্রস্তুতকারী সমবায় প্রতিষ্ঠানের একজন সদস্য রাহুল মেহতা বলেন, প্রস্তাবিত ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের কারণে ভারতের বিকল্প বাজার বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের তুলনায় আমাদের উৎপাদন খরচ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়ে যাবে।
রাহুল মেহতা আরও বলেন, ‘এই অতিরিক্ত দাম কে দেবে? এটি খুবই কষ্টকর অবস্থার চিত্র… এর ফলে শুধু শিপমেন্টই বন্ধ হবে না, পাশাপাশি রপ্তানি আদেশও পড়ে যাবে। ফলাফল হিসেবে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, বেকারত্ব বাড়বে।’