প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়াতে ‘আর্মি রকেট ফোর্স কমান্ড’ গঠনের ঘোষণা শাহবাজ শরিফের

দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করতে ‘আর্মি রকেট ফোর্স কমান্ড’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে ইসলামাবাদের জিন্নাহ স্পোর্টস স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস ও ‘মারকা-ই-হক’ উদযাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। খবর ডনের।
‘মারকা-ই-হক’ বা ‘সত্যের যুদ্ধ’ হলো এপ্রিলের পেহেলগাম হামলার পর ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তানের সামরিক পদক্ষেপের সরকারি নাম, যা ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে শেষ হয়।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তি-সজ্জিত এবং শত্রুকে সব দিক থেকে আঘাত হানতে সক্ষম এই বাহিনী আমাদের প্রচলিত যুদ্ধক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করতে আরেকটি মাইলফলক হবে।”
তিনি জানান, সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা আরও বাড়ানোই মূল লক্ষ্য, আর এই বাহিনী গঠন সেই প্রক্রিয়ার অংশ।
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘর্ষের পর ইসলামাবাদ প্রতিরক্ষা বাজেট ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ২০ শতাংশ বাড়িয়েছে।

পাকিস্তানের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা রয়েছে, যার কিছু গত মে মাসে জে-১০সি ভিগোরাস ড্রাগন ও জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমানের সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার, সিনেট চেয়ারম্যান ইউসুফ রাজা গিলানি, জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিক, ফেডারেল ও প্রাদেশিক মন্ত্রী, কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। তুরস্ক ও আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও কুচকাওয়াজে অংশ নেন। পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের ফ্যালকন স্কোয়াড আকাশে ফ্লাইপাস্ট প্রদর্শন করে।
শাহবাজ শরিফ তার ভাষণে দাবি করেন, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে পাকিস্তান “তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই” নির্ণায়ক বিজয় অর্জন করেছে। তিনি বলেন, “ভারত ভুলে গিয়েছিল যে যুদ্ধ শুধু অস্ত্র দিয়ে জেতা যায় না, বরং জাতীয় চেতনা দিয়েই জয় আসে।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ সংঘর্ষ-পরবর্তী সময়কে “নতুন পাকিস্তানের জন্ম” বলে আখ্যা দেন এবং সেনাপ্রধান মুনিরকে “জাতির সন্তান” হিসেবে উল্লেখ করে তার কৌশলগত নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র “আগ্রাসনের জন্য নয়, কেবল প্রতিরক্ষার জন্য।”
অনুষ্ঠানে তিনি সব রাজনৈতিক দলকে ‘মিসাক-ই-ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান’-এ যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে বিশ্বের কাছে বার্তা যায় যে মতপার্থক্য থাকলেও পাকিস্তানের স্বার্থে সবাই একতাবদ্ধ।