পশ্চিমা উসকানি পেলে ‘কঠোর জবাব’ দেবে রাশিয়া : ল্যাভরভ

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সতর্ক করে বলেছেন,
"আমার দেশের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দৃঢ়ভাবে দেওয়া হবে।"
স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে তিনি বলেন, রাশিয়ার পশ্চিমা দেশগুলোতে আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে প্ররোচিত হলে জবাব দিতে প্রস্তুত। খবর আল জাজিরার।
ল্যাভরভের এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়ে যখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া ইউরোপে ড্রোন ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে হুমকি তৈরি করছে। তিনি এক্সে লিখেছেন,
"রাশিয়া পরীক্ষা করছে ইউরোপ নিজেদের কতটা রক্ষা করতে পারে এবং মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করছে, যাতে তারা বলে— যদি নিজেদের রক্ষা করতে না পারি তবে কেন ইউক্রেনকে সহায়তা দেব?"
রাশিয়া অবশ্য পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘন ও এস্তোনিয়ায় যুদ্ধবিমান পাঠানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ডেনমার্কের বিমানবন্দরে অজ্ঞাত ড্রোন দেখা যাওয়ার ঘটনাতেও তারা জড়িত নয় বলে দাবি করছে।
ল্যাভরভ পশ্চিমাদের অভিযোগকে “তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয় দেখানো” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবার স্পষ্ট করেছেন যে ন্যাটো বা ইইউ দেশ আক্রমণের কোনো পরিকল্পনা নেই।
তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনায় কিছুটা আশা দেখছেন। সম্প্রতি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের দখলকৃত ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার পরও ল্যাভরভ বলেন, "আমাদের এখনও রাশিয়া–আমেরিকা সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার আশা রয়েছে, বিশেষ করে আলাস্কা সম্মেলনের পর।"
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, শনিবার তারা পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের ডেরিলোভে ও মাইস্কে এবং দ্নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের স্তেপোভে গ্রাম দখল করেছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেন জানিয়েছে তারা রাশিয়ার চুভাশিয়া অঞ্চলের একটি তেল পাম্পিং কেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার রাতভর গোলাবর্ষণে অন্তত একজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছে। ওডেসা অঞ্চলে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেন শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এরই মধ্যে তারা ইসরায়েল থেকে একটি প্যাট্রিয়ট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেয়েছে, আরও দুটি আসছে বছরের শেষ নাগাদ।
চার দিন ধরে রাশিয়ার দখলে থাকা জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা নিয়ে মস্কো ও কিয়েভ একে অপরকে দোষারোপ করেছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এটি দীর্ঘতম বিদ্যুৎবিচ্ছিন্নতার ঘটনা। ছয়টি রিঅ্যাক্টর বন্ধ থাকলেও শীতলীকরণ ব্যবস্থা সচল রাখতে বিদ্যুৎ অপরিহার্য।