আগামী নির্বাচনে পরাজিত দল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে : জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে যে দল পরাজিত হবে, তারা হয়তো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল পার্টির চেয়ারম্যানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন বাস্তবতায় দাঁড়িয়েছে। এ জন্য দেশের রাজনৈতিক নেতারাই দায়ি উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তন হয়, আবার শান্তিপূর্ণভাবে সরকার গঠন হয়। আবার সরকারের কেউ পদত্যাগ করলে, শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে তা পূরণ হয়। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা ভিন্ন। এখানে নির্বাচন যেন যুদ্ধ, নির্বাচনে পরাজিত হলে তাকে মরতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এমন বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়নি। এমন বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মত্যাগ করেননি।
এ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। দেশের প্রকৃত মালিক হচ্ছেন জনগণ, তাঁরা যাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত। তারাই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবেন। কিন্তু এখন দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের কাছে নেই। দেশের সাধারণ মানুষ যেন আবার উপনিবেশিক আমলের মতো প্রজা হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শোষণ থেকে মুক্তি পেতে একটি দেশের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। লাখো বীর শহীদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের একটি দেশ অর্জন করেছিল। সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক হচ্ছেন জনসাধারণ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় আরও বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বাস্তবতা অনেকটাই এক। শ্রীলঙ্কায় দশ বছর গৃহযুদ্ধ চলেছে, সেখানে কোন পর্যটক যায়নি। কিন্তু দেশটি দেউলিয়া হয়নি। জবাবদিহিতাহীন সরকারের গোয়ার্তুমির ফলে অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর ও অপরিকল্পিত মেগাপ্রকল্প গ্রহণ ও সে জন্য গৃহীত সুদসহ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে। আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে এর কিছুটা মিল রয়েছে।
অভিযোগ আছে, লুটপাটের কারণে মেগাপ্রকল্পগুলোতে অনেক বেশি ব্যয় হয়। ফলে, ঐ প্রকল্পের আয় দিয়ে ঋণ শোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু যখন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে, তখন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ পেতে পারে, এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মো. জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন মুক্তি, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হুমায়ুন খান, এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এমএ সুবহান, আক্তার হোসেন দেওয়ান, সমরেশ মণ্ডল মানিক, দ্বীন ইসলাম শেখ, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. শাহজাহান মিয়া, খুররম ভূঁইয়া, এম এ কুদ্দুস মানিক, সাইফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা ইস্কান্দার মোল্লা, পল্লী হোসেন, শাহ আলম দেওয়ান ও রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।