আত্মগোপনের ২০ বছর পর চট্টগ্রামে ফাঁসির আসামি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে ছদ্মবেশে ২০ বছর ধরে আত্মগোপনে থাকা ফাঁসির আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। জসিম উদ্দীন নামে ওই আসামি নগরীর লোহাগাড়ার ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যায় দণ্ডপ্রাপ্ত। গতকাল বৃহষ্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম বন্দর থানার নিমতলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ শুক্রবার সকালে আটক জসিম উদ্দিনকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা র্যাব কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে র্যাব কর্মকর্তা তাহিয়াদ আহমেদ জানান, ২০০১ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মাহমুদুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করে জসিম উদ্দীন, সৈয়দ আহমদ ও তাঁর তিনভাই। এ ঘটনায় করা মামলা পরিচালনার কারণে পরের বছর জানে আলমকেও নির্মমভাবে হত্যা করেন সৈয়দ আহমদ ও তাঁর সহযোগীরা। ছোট ভাই মাহমুদুলের হত্যা মামলার সাক্ষী দিতে গিয়ে ২০০২ সালের মার্চে লোহাগাড়ায় আদালত চত্বরে খুন হন তিনি।
এ ঘটনায় ২০০২ সালে জসিম উদ্দিনসহ ১২ জনকে ফাঁসির রায় দেন আদালত। পরে উচ্চ আদালত দুজনকে যাবজ্জীবন দিয়ে বাকি ১০ আসামির ফাঁসির রায় বহাল রাখেন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, হত্যাকাণ্ডের পরপরই আত্মগোপনে চলে যান এ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. জসিম উদ্দিন। এরপর ছদ্মবেশে ট্রাক চালাতে থাকেন। পিতৃপরিচয় গোপন করে নতুন পরিচয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করেন জসিম। এভাবে পালিয়ে বেড়ান প্রায় ২০ বছর।
র্যাব জানায়, জসিম উদ্দিন খুনের ঘটনার পর প্রথমে বোয়ালখালী ও ডবলমুরিংসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। অনেক খোঁজাখুজির পর বন্দর নিমতলা এলাকায় তাঁর সন্ধান পায় র্যাব। পরে ওই এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ জসিমকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তাহিয়াদ আহমেদ।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি দুই মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ আহমদকে গ্রেপ্তার করে সংস্থাটি। জানে আলম হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে তিন জন কারাগারে রয়েছেন, তিনজন মারা গেছেন এবং বাকিরা পলাতক বলে জানায় র্যাব।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ মার্চ আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার আগে সকাল ৯টার দিকে ব্যবসায়ী জানে আলমকে তাঁর এক বছর বয়সী সন্তানের সামনে প্রথমে লাঠিসোটা, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে সৈয়দ বাহিনীসহ স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারী। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তাকে গুলি করা হয়। ওই সময় এ ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ছেলে মো. তজবিরুল আলম বাদী হয়ে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।