আ.লীগ-যুবলীগের তিন নেতাকে অব্যাহতি-বহিষ্কারের সুপারিশ
পাবনা গণপূর্ত অফিসে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের তিন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি ও স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নোটিশ দেওয়া হয়।
নোটিশ প্রাপ্তরা হলেন বিলুপ্তকৃত পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন রেজা খান মামুন (এম আর খান মামুন) এবং পাবনা সদর উপজেলার বিলুপ্তকৃত কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ ফারুক হোসেন ওরফে ফারুক হাজি।
দলের সব পদ থেকে কেন স্থানীভাবে বহিষ্কার করা হবে না ১৫ দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে এই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, একই অভিযোগে পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ আনোয়ার হোসেন ওরফে শেখ লালুকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে পাবনা জেলা যুবলীগ।
পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, ‘আজ বুধবার আমরা শেখ লালুকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। আজকালের মধ্যে কেন্দ্র বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানাবে।’
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের সঙ্গে কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়া রাজশাহীর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।
তবে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির উদ্দিন আহমেদ মান্না ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্সের স্বাক্ষর করা চিঠি শোকজপ্রাপ্ত মহসীন রেজা খান মামুন (এম আর খান মামুন) এবং হাজি ফারুকের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে ওয়াটসআপ ও কুরিয়ার করে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, বিলুপ্তকৃত পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন রেজা খান মামুন (এম আর খান মামুন) এবং পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ আনোয়ার হোসেন ওরফে শেখ লালুর অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত খবর জানতে পারবেন।’
এর আগে লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করায় গত মঙ্গলবার পাবনা পুলিশ এই দুজনের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেয়।
পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গণপূর্ত বিভাগ বিষয়টি নিয়ে কোনো অভিযোগ না করা সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার। ফেসবুকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ নিজ উদোগে কাজ শুরু করে। গত শনিবার রাতে দুই নেতার কাছ থেকে অস্ত্র দুটি জব্দ করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাজি ফারুক ও বিলুপ্তকৃত পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম আর খান মামুন ও পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু ২৫ থেকে ৩০ জন সহযোগী নিয়ে গত ৬ জুন দুপুর ১২টার দিকে সশস্ত্র অবস্থায় পাবনার গণপূর্ত ভবনে ঢুকে মহড়া দেন। ওই দিন অস্ত্র নিয়েই তারা কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে ঢোকেন। ওই সময় তাদের সঙ্গীরা বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। ১২টা ১২ মিনিটে তারা ফিরে যান। গত ১২ জুন সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি ভাইরাল হলে সারা শহরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।