করোনা পরিস্থিতিতে বিনামূল্যে রোগী দেখছেন ডা. হরি শংকর

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনেক চিকিৎসকই চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন। আর করোনা উপেক্ষা করে হাতে গোনা যে দু-চারজন চিকিৎসক নিয়মিত রোগী দেখছেন। তাঁদেরই একজন ময়মনসিংহের চক্ষু চিকিৎসক হরি শংকর দাস (৭১)।
শুরু থেকেই রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন হরি শংকর। করোনাকালেও নিয়মিত রোগী দেখার পাশাপাশি বিনামূল্যে রোগী দেখার মানবিক ধারা অব্যাহত রেখেছেন এই চিকিৎসক। তাঁর পারমিতা চক্ষু হাসপাতালেও গরিব রোগীদের জন্য হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন ছাড় দেওয়া হয়।
ডা. হরি শংকর জানান, কারো কারো মতে, চোখের মাধ্যমেও করোনা সংক্রমণ হতে পারে। সেজন্য চিকিৎসক, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সাধ্যমতো মাস্ক পরিধান ও ফেসশিল্ড ব্যবহারের পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
হরি শংকর আরো জানান, প্র্যাকটিসের শুরু থেকেই তিনি প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ থেকে ১০ জন সামর্থ্যহীন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বিনামূল্যে ব্যবস্থাপত্রের পাশাপাশি সাধ্য অনুয়ায়ী কখনো কখনো রোগীকে ওষুধ দিয়েও সহায়তা করেন তিনি।
এ চিকিৎসকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁর চল্লিশ বছরের প্র্যাকটিস জীবনে অন্তত পৌনে দুই লাখ রোগীকে বিনামূল্যে সেবা দিয়েছেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিজ জন্মস্থান নিকলা গ্রামে প্রতি বছর বিনামূল্যে ‘আই ক্যাম্প’ পরিচালনা করেন হরি শংকর। এ ছাড়া যুক্ত আছেন লায়ন্স ক্লাবের মতো স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সার্ভিস ক্লাবের সঙ্গেও। যতদিন এ পেশায় আছেন, এ সেবামুখী নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না বলেও জানান এ চিকিৎসক।
১৯৭৪ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চক্ষু চিকিৎসার ওপর এমবিবিএস অর্জন করেন হরি শংকর। ১৯৭৮ সালে চেম্বার প্র্যাকটিস শুরু করেন এই চিকিৎসক। তিনি ১৯৯৪ সালে পারমিতা চক্ষু হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।