ছিনতাইয়ের শিকার পুলিশ কনস্টেবল, গ্রেপ্তার ৪
রাজধানীর রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সামনে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন পুলিশের বিশেষ শাখার কনস্টেবল নার্গিস আক্তার। সে সময় তাঁর কাছে থেকে একটি স্বর্ণের চেইন, স্মার্টফোন, হাতের ব্যাগে রাখা পাঁচ হাজার টাকা ও একটি বাটন ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা।
গত শুক্রবার ভোরে এই ঘটনার পর পল্টন থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী কনস্টেবল। অভিযোগ পেয়ে তিন দিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পেশাদার এই চক্রের চারজনকে গতকাল সোমবার (১৫ মে) রাতে মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগরের পল্টন থানার পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মতিঝিল জোনের ডিসি উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—সোহেল (৩০), আক্তার ওরফে সোহরাব (৩২), আবির হোসেন ওরফে রাসেল (২৫) ও মো. রনি।
হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘গ্রেপ্তার চারজন পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য। তাঁরা একটি ছিনতাই করা পিকআপ নিয়ে রাতের বেলা সারা ঢাকা ঘুরে ঘুরে নির্জন স্থানে ছিনতাই কার্যক্রম করে। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি ও মাদক মামলা আছে। বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তাঁরা জেল খেটেছেন। জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার একই কাজ করেন।’
হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘গত শুক্রবার ও শনিবার দিবাগত রাতে তাঁরা ছিনতাইয়ের ওই পিকআপ নিয়ে নগরীতে ঘুরে ঘুরে চারটি ছিনতাই ও একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন জায়গার শতাধিক সিসি টিভি ফুটেজ দেখে এই চারজনকে শনাক্ত ও ডাকাতি আর ছিনতাইয়ের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করা পিকআপটি তাঁরা গত চার-পাঁচ দিন আগে অন্য কোথাও থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এই পিকআপ ব্যবহার করে তাঁরা গত শুক্রবার দিবাগত রাতে মোহাম্মদপুর ও রাজাবাজার এলাকায় দুটি ছিনতাই করেন। পরদিন শনিবার বনানীতে একটি ছিনতাই ও তেজগাঁও এলাকায় একটি দোকানে ডাকাতি করেন।’
এই চক্রের আরও তিনজনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে মতিঝিল থানা–পুলিশ। এই মামলার তদারক কর্মকর্তা ডিএমপি মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রওশানুল হক সৈকত বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের মধ্যে সোহেলের বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা আছে, আক্তার ওরফে সোহরাবের বিরুদ্ধে চারটি ডাকাতি ও মাদকসহ আরও দুটি মামলা আছে, আমির হোসেন ওরফে রাসেলের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি, একটি দস্যুতা ও মাদকসহ আরও তিনটি মামলা এবং মো. রনির বিরুদ্ধে ডাকাতি, দস্যুতা ও মাদকসহ আটটি মামলা আছে।’
গ্রেপ্তারের সময় এই চারজনের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র, একটি পিকআপ ও লুটে নেওয়া টাকা এবং চারটি স্মার্টফোন ও তিনটি বাটন ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।