‘জঙ্গিনেতা’ গুনবি রিমান্ডে

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ‘আধ্যাত্মিক নেতা’ মাহমুদ হাসান গুনবি ওরফে হাসানের তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আসামি মাহমুদ হাসান গুনবিকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর শাহ আলী থানার বেড়িবাঁধসংলগ্ন এলাকা থেকে মাহমুদ হাসান গুনবিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের পরে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘মাহমুদ হাসান গুনবি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নামের সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বা তাদের কোনো পদেও নেই। কিন্তু নিজেকে জানান দেওয়ার জন্য তিনি হেফাজতসহ অন্যান্য সংগঠনের ওয়াজ মাহফিলে যোগদান করে উগ্রবাদী বক্তব্য দিতেন। আমরা জানতে পেরেছি, সাম্প্রতিক সময়ে যারা সরকারবিরোধী নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন; গুনবির সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গুনবি দাওয়াত ইসলাম নামের একটি সংগঠন পরিচালনা করতেন। এ সংগঠনের ব্যানারে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পরিবর্তনে উদ্বুদ্ধ করে জঙ্গিবাদে অন্তর্ভুক্তির বিশেষ উদ্যেগ গ্রহণ করে। এ ক্ষেত্রে তারা বিশেষ করে ‘মনস্তাত্ত্বিক অনুশোচনা’ জাগ্রত করার কৌশল অবলম্বন করে। যদিও এ সংগঠনটি নিষিদ্ধ কোনো সংগঠন নয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত র্যাবের এই পরিচালক জানান, গুনবি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তিনি ২০০৮ সালে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া থেকে তাইসির দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করে। তারপর তিনি ঢাকাসহ কুমিল্লা, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সজারের বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হন। পাশাপাশি ধর্মীয় মতাদর্শের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। গুনবি ২০১০ সাল থেকে ওয়াজ শুরু করেন। তারপর তিনি ২০১৪ সাল থেকে ধর্মীয় বক্তব্যে উগ্রবাদীত্ব প্রচারে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। এ ছাড়া তিনি ধর্মীয় পুস্তকের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন।
গুনবি প্রথমে হুজি (বি) সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জানিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, পরবর্তীতে জসিম উদ্দিন রহমানির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। পরে তিনি আনসার আল বাংলা টিমের (আনসার আল ইসলাম) সঙ্গে যুক্ত হন। জসিম উদ্দিন রাহমানি গ্রেপ্তারের পর গুনবি সংগঠনের উগ্রবাদীত্ব প্রচারক হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেন।