জুস পান করিয়ে দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙালেন খুবি উপাচার্য

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার আশ্বাস দিয়ে নিজ হাতে জুস পান করিয়ে দুই শিক্ষার্থীর অমরণ অনশন ভাঙালেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আজ মঙ্গলবার রাত ৮টার দিয়ে উপচার্য ড. অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান ওই দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙান।
এর আগে অনশনরত দুই শিক্ষার্থী আজ সকালে উপচার্য বরাবর লিখিতভাবে দুঃখ প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছিলেন।
গত ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা বোর্ডের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালন করে। এরপর তাঁরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে চিঠি দেন। এতে সংকট নিরসনের পথ সুগম হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যস্থতায় রাত ৮টায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান জুস পান করিয়ে দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভঙ্গ করান।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার অধ্যাপক সাধন রঞ্জন ঘোষ, বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্টরা, ডিসিপ্লিন প্রধানরা, শিক্ষক এবং সহকারী ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে শৃঙ্খলাবোর্ডের সভা ডেকে দুই শিক্ষার্থীর আবেদনের বিষয়টি উপস্থাপন এবং সেখানে সর্বোচ্চ সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।’
উপাচার্য আরো বলেন, ‘শিক্ষকরা কখনোই শিক্ষার্থীদের অমঙ্গল চান না। তাঁরা কেবল শিক্ষক নন, অভিভাবকও। শিক্ষার্থীরা কোনো ভুল করতে পারে। তবে তারা দুঃখ বা ক্ষমা প্রকাশ করলেই শিক্ষক বা অভিভাবক নমনীয় হন।’
উপাচার্য শিক্ষার্থীদের প্রতি বাবা-মা ও শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানান।
গত কয়েক দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতির অবসানে খুলনাবাসীর অভিভাবক কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক স্বউদ্যোগে ক্যাম্পাসে এসে সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি যে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখিয়েছেন তার জন্য উপাচার্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ছাত্রদের পাঁচ দফা দাবি আদায়ের সময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলাম সোহান এবং বাংলা ডিসিপ্লিনের মোবারক হোসেন নোমান নামের দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছিল।