ঝালকাঠিতে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন

ঝালকাঠিতে ২০০৫ সালে আলোচিত জেএমবির সিরিজ বোমা হামলা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক শেখ মো. তোফায়েল হাসান এ আদেশ দেন।
দণ্ডাদেশ পাওয়া দুজন হলেন ঝালকাঠির বিকনা গ্রামের মো. জিয়াউর রহমান ও বৈদারাপুর গ্রামের ফরিদ হোসেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় উপলক্ষে আজ ঝালকাঠি আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরপর পাঁচটি বোমার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঝালকাঠি শহর। একই সময় বোমার বিস্ফোরণ ঘটে ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত চত্বর, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, আইনজীবী সমিতি, সদর উপজেলা পরিষদ চত্বর ও বিকনা টেম্পোস্ট্যান্ডে।
এ ঘটনায় ঝালকাঠি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাব আলী বাদী হয়ে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা করেন। এই মামলায় আহত অবস্থায় আটক ফরিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। জেএমবির সদস্য ঝালকাঠির বিকনা গ্রামের মো. জিয়াউর রহমান ও আহত অবস্থায় আটক রিকশাচালক ফরিদ হোসেনকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়। ঘটনার দুই বছর পর অভিযুক্ত ফরিদ হোসেন আদালত থেকে জামিন পান। পরে অপর অভিযুক্ত জিয়াউর রহমানও জামিনে মুক্তি পান। যুক্তিতর্কের দিন আদালত তাদের জামিন বাতিল করেন। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আজ রায় দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আ স ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন কবীর।
২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট বোমা হামলার ঘটনার প্রায় তিন মাস পর ১৪ নভেম্বর জেএমবির আত্মঘাতী বোমা হামলায় ঝালকাঠির দুই বিচারক সোহেল আহমেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ে নিহত হন। এ মামলায় ঝালকাঠির আদালতেই জেএমবিপ্রধান শায়খ আবদুর রহমানসহ সাত শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসির আদেশ হয়। ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দেশের বিভিন্ন কারাগারে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। এরপর ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল মামলা পরিচালনাকারী তৎকালীন পিপি হায়দার হুসাইন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।