দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত আ.লীগ নেতার লাশ নিয়ে কুষ্টিয়ায় মানববন্ধন

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মণ্ডলকে (৫০) গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে নিহতের লাশ নিয়ে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
আজ শুক্রবার বিকেলে ভেড়ামারা শহরে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল আলম চুনু, সাধারণ সম্পাদক শামিমুল ইসলাম ছানা, চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বুলবুল কবির, নিহত সিদ্দিকের স্ত্রী আফরোজা খাতুনসহ প্রায় ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল আলম চুনু ও সাধারণ সম্পাদক শামিমুল ইসলাম ছানা বলেন, অবিলম্বে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্দিক মণ্ডলকে হত্যাকারী খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। বলে
সিদ্দিক মণ্ডলের স্ত্রী আফরোজা খাতুন বলেন, চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপনের নির্দেশে আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। চেয়ারম্যান তপনসহ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন জাসদের সভাপতি আব্দুল হাফিজ তপন জড়িত বলে দাবি করে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বুলবুল কবির বলেন, বহিরাগত অবৈধ অস্ত্রধারীদের সঙ্গে নিয়ে তপন চেয়ারম্যান এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। অবিলম্বে চেয়ারম্যান তপনসহ সিদ্দিক মণ্ডল হত্যায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
এর আগে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সিদ্দিকের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বিকেল ৪টার দিকে ভেড়ামারা শহরের মানববন্ধনস্থলে পৌছালে শতশত মানুষ সিদ্দিক মণ্ডলকে খুনের অভিযোগে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপনসহ জড়িত সকল আসামিকে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন।
এ ব্যাপারে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপন বলেন, ‘এলাকার মণ্ডলগ্রুপ ও মালিথা গ্রুপের মধ্যে বিবদমান বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনার জেরে আর যাতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
উল্লেখ্য, আজ শুক্রবার সকালে চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মণ্ডলের ভাই বাদশা মণ্ডল পার্শ্ববর্তী চড়পাড়া মাঠে জমিতে কাজ করছিল। এসময় প্রতিপক্ষ মালিথা গ্রুপের লোকজন এসে বাদশা মণ্ডলের উপর হামলা চালিয়ে তার এক পায়ের রগ কেটে দেয়। খবর পেয়ে বাদশাকে উদ্ধার করতে তার ভাই সিদ্দিক মণ্ডল, খালেক মণ্ডল ও ইউনুস মণ্ডলসহ বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিপক্ষরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধসহ আহতদের উদ্ধার করে ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিদ্দিক মণ্ডলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত সিদ্দিকের আরও দুই ভাই ইউনুস মণ্ডল ও খালেক মণ্ডল গুলিবিদ্ধ হয়। নিহত ও আহতরা চাঁদগ্রামের অমর মণ্ডলের ছেলে।