ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ে : ধর্ষকের জামিন

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক যুবক ধর্ষণের শিকার নারীকে বিয়ে করায় তাঁকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামি কারাগার থেকে বের হয়ে জামিনের অপব্যবহার করলে তাঁর জামিন বাতিল হয়ে যাবে বলেও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালতে জামিনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
গত ২২ অক্টোবর রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এক ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি আসামি ও ভুক্তভোগীর মধ্যে কারা ফটকেই বিয়ের আয়োজন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৫ ডিসেম্বর রাজশাহীর কারা ফটকে সাজাপ্রাপ্ত যুবকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর বিয়ে হয়।
বিয়ের পর সে বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, বিয়ের বিষয়টি অবহিত করে জামিন আবেদন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে আদালত সাজাপ্রাপ্ত যুবককে এক বছরের জামিন দিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ওই যুবকের সঙ্গে তার খালাতো বোনের (ভুক্তভোগী) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন ওই যুবক। এতে ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু এরপর থেকে ওই যুবক আর বিয়ে করতে রাজি হননি। এ বিষয়ে সালিশ করা নিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়।
শেষ পর্যন্ত সালিশ বৈঠক না হওয়ায় ওই বছরের ২৩ অক্টোবর স্থানীয় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে হাজির হয়ে প্রেগন্যান্সি পরীক্ষা করান ভুক্তভোগী নারী। এরপর ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় হাজির হয়ে যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর বিচার শেষে ওই বছরের ১২ জুন এক রায়ে যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। রায়ে বলা হয়, যখন ভুক্তভোগী ধর্ষণের শিকার হন, তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।
২০১২ সালের রায়ের পর থেকে ওই যুবক কারাবন্দি। এ অবস্থায় তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন।