নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা সাক্ষ্য আইনের ধারা বাতিল হবে
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/10/24/highcourt.jpg)
ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা সংক্রান্ত সাক্ষ্য আইনের ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানিকালে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। পরে আদালত রিটের শুনানি শেষে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তাদের সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার শারমিন আক্তার শিউলী ও অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এর আগে ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা সংক্রান্ত সাক্ষ্য আইনের দুটি ধারা বাতিল চেয়ে ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নারীপক্ষ ও ব্লাস্টের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন রিটটি দায়ের করেন। রিটে আইন মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করা হয়।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘আমরা সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ও ১৪৬ ধারা দুটি বাতিল চেয়ে রিট দায়ের করেছি। রিটে ধারা দুটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।’
সাক্ষ্য আইনের ধারা ১৫৫ (৪)-এ বলা হয়েছে, ‘কোনো লোক যখন বলাৎকার কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে সোপর্দ হয়, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারিনী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্র সম্পন্ন রমণী।’
এ ছাড়া সাক্ষ্য আইন ১৪৬ ধারার উপধারা ৩-এ বলা হয়েছে, ‘সাক্ষীর চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন করা যেতে পারে, যাতে সে এমন তথ্য দেয় যা দোষী বা নির্দোষ-সাব্যস্ত করতে সহায়ক হবে।’
সাক্ষ্য আইনের এ ধারা বাতিলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায় থেকে দাবি ওঠে। তাদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য আইনের এ ধারা বাতিলের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে একটি অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সাধারণত দুশ্চরিত্র হলেই যে ধর্ষণ করা যাবে, বিষয়টি আমরা অনুমোদন দিতে পারি না। এ কারণে সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ধারা বাতিল হয়ে যাচ্ছে। সাক্ষ্য আইন সংশোধন হচ্ছে। এটির পরিববর্তন আমরা করছি। ভার্চুয়াল কোর্ট করার জন্য সাক্ষ্য আইনের যে যে জায়গায় পরিবর্তন করা দরকার সেগুলো আমরা পরিবর্তন করব।’ প্রস্তাবটি জাতীয় সংসদে উত্থাপনেরও কথা বলেছিলেন তিনি।