নড়াইলে মেয়রের মামলা : প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

নড়াইলের পৌর মেয়রের দায়ের করা মামলার ঘটনায় পৌর পরিষদ ও ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে তিনটায় পৌর ভবনের সম্মেলন কক্ষে নড়াইল পৌর মেয়র আনজুমান আরা এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। এ ঘটনায় শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নড়াইল পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনজুমান আরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক নামধারী কয়েক সন্ত্রাসী গত মঙ্গলবার দুপুরে আমার সাথে পৌর ভবনের নিজ কক্ষে অশালীন আচরণ ও হুমকিধমকি প্রদর্শনের পর থানায় মামলা ও স্মারকলিপি প্রদান করা হলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো সন্ত্রাসীরা মানববন্ধন করেছে। তিনি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের যদি দমন করা না যায়, তাহলে নড়াইল পৌরসভার সাধারণ মানুষ বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হবে। পবিত্র ও রমজানের কারণে তিনি কঠোর আন্দোলন থেকে সাময়িক বিরত রয়েছেন বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র-১ কাজী জহিরুল হক, প্যানেল মেয়র-২ রেজাউল বিশ্বাস, কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটু, ইপি রাণী বিশ্বাস, আহসান হাবিব প্রমুখ।
এদিকে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের ব্যানারে মানববন্ধনে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বক্তব্য দেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিঠুন বিশ্বাস, জেলা ছাত্রলীগের স্কুলবিষয়ক সম্পাদক আলামিন মোল্যা, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ছাত্রলীগনেতা সুজন মোল্যা ও যুবলীগকর্মী এসএম ফয়সাল সাদি।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নড়াইল পৌর মেয়র আনজুমান আরা প্যানেল মেয়র কাজী জহিরুল হকের সঙ্গে পৌর ভবনের নিজ কক্ষে কথা বলছিলেন। এ সময় ওই কক্ষে অবস্থান করা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধন, নড়াইল পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি উচ্ছ্বাস আলম ও সাবেক ছাত্রলীগনেতা ফাইনুল ইসলাম শাওন উচ্চস্বরে বলতে থাকেন মেয়র নাকি পৌরসভার হাটবাজার, বাস টার্মিনালের খাজনা ও টোলের টেন্ডার থেকে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫০% টাকা দাবি করেছেন। একপর্যায়ে তারা অশালীন ভাষায় গালাগাল ও হুমকিধমকি দেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর মেয়রের কক্ষে পৌর পরিষদের এক সভায় এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয় এবং ওই দিন রাতে পৌর মেয়র বাদী হয়ে দোষীদের বিচার দাবি করে বাঁধন, উচ্ছ্বাস ও শাওনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা এবং পরের দিন বুধবার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।
নড়াইল সদর থানার ওসি শওকত কবির বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মেয়রের মামলা ও ছাত্রলীগের এক পক্ষের মানববন্ধনে শহরে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।