‘পারিশ্রমিক নিয়ে দ্বন্দ্বে বাসের সুপারভাইজারকে হত্যা’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/04/17/cid.jpg)
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ঝুমুর মোড়ে বাসের ভেতর থেকে উদ্ধার সুপারভাইজারের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পারিশ্রমিক নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছে, বলছে সিআইডি।
আজ রোববার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এসব তথ্য জানান।
মুক্তা ধর বলেন, ‘ঘটনাটি দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রচার করে। এরই মধ্যে ওই সুপারভাইজারের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে সিআইডি। বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে মো. ইউসুফ ভূঁইয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।’
মুক্তা ধর জানান, গতকাল রোববার এক অভিযানে নরসিংদীর মাধবদী এলাকা থেকে ইউসুফ ভুঁইয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই উন্মোচিত হতে থাকে রহস্য। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন ইউসুফ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, ইউসুফ ভবঘুরে জীবনযাপন করত। তাঁর এক প্রতিবেশী তাঁকে বাসে হেলপারির চাকরি দেন। গত ৮ এপ্রিল ঢাকার মানিকনগর বাস কাউন্টার থেকে চালক নাহিদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে সুপারভাইজার রিয়াদ হোসেন লিটন (৩৭), পুরাতন স্টাফ শিপনসহ যাত্রী নিয়ে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশে রওনা হন।
সেদিন রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় লক্ষ্মীপুর পৌঁছে যাত্রীদেরকে গন্তব্যে নামিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ঝুমুর মোড়ে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বাসটি পার্কিং করা হয়। এ সময় পুরাতন স্টাফ শিপন দুদিনের ছুটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে তাঁর স্থানে ৯ এপ্রিল ভোর থেকে সহকারী হিসেবে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইউসুফ গাড়িটি পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে থাকেন।
চালক নাহিদ হোসেন, সুপারভাইজার রিয়াদ হোসেন লিটন ও সহকারী শিপন তাঁদের প্রাপ্য মজুরী নিয়ে বাড়িতে চলে যান। পরে রাত ১টার দিকে নতুন সহকারী ইউসুফ গাড়িতে থাকা সুপারভাইজার লিটনের কাছে পারিশ্রমিক চান। কিন্তু, তাঁর ডিউটি এখনো শুরু হয়নি বলে জানান লিটন। পরে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।
একপর্যায়ে গাড়িতে থাকা লোহার হুইল রেঞ্জ দিয়ে ইউসুফ সুপারভাইজার লিটনকে মাথা বরাবর আঘাত করলে বাসের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। লিটন মারা গেলে ইউসুফ তাঁকে বাসের সিটে বসিয়ে পালিয়ে যান।
ওই ঘটনার পর রিয়াদ হোসেন লিটনের স্ত্রী হালিমা আক্তার অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হন ইউসুফ।