বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় ৪ জন আটক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আটক ব্যক্তিরা হলেন আবু বকর, নাহিদ, আল আমিন ও ইউসুফ। আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, যে চারজনকে আটক করা হয়েছে তাঁরা সবাই ইবনে মাসউদ মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত কিংবা সেখানকার শিক্ষক। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন আবু বকর ও নাহিদ। তাঁদের প্রথমে আটক করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া স্বীকারোক্তির মাধ্যমে যাঁদের নাম চলে আসছে তাঁরা হলেন আল আমিন ও ইউসুফ। তাঁদেরও আটক করা হয়েছে। তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা দেশে কোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেব না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। কেউ যদি মনে করেন, তাঁরা অনেক শক্তিশালী তাহলে এটা হবে তাঁদের ভুল ধারণা।’
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচার না করার আহ্বান জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘আমি গতকাল ফেসবুকে দেখেছি একটা ছোট ছেলে বলছে যে মুক্তিযুদ্ধে কত শহীদ হয়েছে, তার চেয়ে বেশি রক্ত হেফাজতের তারা দিয়েছে। এই যে মিথ্যাচার, এই যে বিভ্রান্তি অল্পবয়সের ছেলের মাথার মধ্যে দিচ্ছে, এটা তারা জেনে শুনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দিচ্ছে। এটা রোধ করতে হবে।’
এদিকে ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় আজ কুষ্টিয়া জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাত। তিনি বলেন, ৩টার দিকে ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় আটক চারজনের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন।’
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার গভীর রাতে কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনা সেখানকার সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রথম দুজনকে আটক করা হয়। আটক করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা আরো দুজনের নাম জানান। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পরে আরো দুজনকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আইনশঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘যাদের আটক করা হয়েছে তাঁরা ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তি। হেফাজতে ইসলাম বা খেলাফত মজলিসসহ যে সব ধর্মভিত্তিক দলগুলো আছে, প্রত্যেকটি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা হয় নিজেরা রাজাকার ছিল অথবা রাজাকার পরিবারের সন্তান। যারা আমাদের স্বাধীনতা মানতে পারেনি, তারাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হামলা করেছে। এই ভাস্কর্যে হামলা মানে দেশের ওপর হামলা, জাতির ওপর হামলা এবং সংবিধানের ওপর হামলা।’