বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা, প্রতিবেদন লেখাবিষয়ক কর্মশালা

বন্যপ্রাণী ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এ সংক্রান্ত অপরাধ প্রতিবেদনের গুণগত মানোন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডাব্লিউসিএস বাংলাদেশ ও বন অধিদপ্তর যৌথভাবে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। আজ শুক্রবার স্থানীয় একটি হোটেলে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের ৩২ জন প্রতিনিধি এ কর্মশালায় অংশ নেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য দমনে একটা বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা হলো অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করা। বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের সবার এক হয়ে লড়তে হবে। সাংবাদিক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। বন্যপ্রাণী আমাদের সম্পদ। যদি আমরা দ্রুতই কোনো পদক্ষেপ না নিতে পারি অচিরেই আমরা এদের চিরতরে হারিয়ে ফেলব।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘বন্যপ্রাণী অপরাধ বা অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত সঠিক এবং সম্পূর্ণ প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে মানোন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে আংশিক তথ্য নয়, বিস্তারিত ও সঠিক খবরাখবর তুলে ধরতে হবে। কোন প্রজাতি, কোথা থেকে আসছে, কীভাবে আসছে, কোথায় যাচ্ছে, কতজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরবর্তী বিচারকার্যের কী হলো সবকিছু। তাহলেই কেবল বন্যপ্রাণীর অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’
কর্মশালার প্রশিক্ষক ও ডাব্লিউসিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ কর্মশালায় বন্যপ্রাণীর ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত প্রতিবেদনসমূহের সঠিক ও তথ্যবহুল প্রতিবেদন লেখার ও জনগণকে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে সহায়ক ভূমিকা পালনের সুযোগ করে দিবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আব্দুল আউয়াল সরকার তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ‘অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে, গ্রেপ্তার করতে এবং বিচারকার্য সম্পন্ন করতে দেশের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বন অধিদপ্তর এবং ডাব্লিউসিএস বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় কার্যকরী প্রশিক্ষণ কর্মশালা নিয়মিতভাবে পরিচালনা করছে। বন্যপ্রাণী ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা ও জনমত তৈরির মাধ্যমে এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্যের বিস্তারিত প্রতিবেদন তুলে ধরে গণমাধ্যমকর্মীরাও আমাদের এই প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।’
এছাড়া প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ড. লস্কর মাকছুদুর রাহমান, সিনিয়র অ্যাডভাইজার মো. তারিকুল ইসলাম, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন প্রোগ্রামের কোঅর্ডিনেটর সামিউল মোহসেনিন, ডাব্লিওসিএস বাংলাদেশের এডুকেশন কো-অর্ডিনেটর নাদিম পারভেজ।