শহীদ মিনারে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/04/30/shahid-minar_mal-1.jpg)
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মরদেহে সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুরে আবুল মাল আবদুল মুহিতের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁর ভাই, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনসহ পরিবারের সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রাজধানীর গুলশান আজাদ মসজিদে আবদুল মুহিতের প্রথম জানাজা সম্পন্ন অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতারা অংশ নেন। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হলে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কবীর আহাম্মদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকারের পক্ষে সার্জেন্ট-অ্যাট-আর্মস কমোডর এম এম নাঈম রহমান শ্রদ্ধা জানান।
এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় আবদুল মুহিতের মরদেহে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং তাঁর রাজনৈতিক বন্ধুরা শ্রদ্ধা জানান।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2022/04/30/shahid-minar_mal.jpg)
আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা আখতারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, জাসদ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে রাশেদ খান মেনন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম, ডা. সামন্ত লাল সেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সচিব, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
আগামীকাল রোববার সিলেটে জানাজা শেষে আবুল মাল আবদুল মুহিতকে দাফন করা হবে।
গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই বছরের ২৯ জুলাই তাঁকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। পরে তিনি করোনামুক্ত হয়ে বাসায় ফেরেন। তখন থেকে তিনি শারীরিকভাবে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েন। গতকাল শুক্রবার আবুল মাল আবদুল মুহিত দিনগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
সাবেক এ অর্থমন্ত্রী ১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে দুবার, এবং ২০০৯-১০ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে টানা ১০ বারসহ সর্বমোট ১২ বার বাজেট পেশ করেন।
১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে তাঁর জন্ম। সরকারি কর্মকর্তা, মন্ত্রী, অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক, লেখক, গবেষক, পরিবেশবিদসহ নানা পরিচয়ে গৌরবোজ্জ্বল আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাবা অ্যাডভোকেট আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ এবং মা সৈয়দ শাহার বানু চৌধুরী। দু’জনই রাজনীতি ও সমাজসেবায় সক্রিয় ছিলেন। মুহিতের তিন সন্তানের নাম শাহেদ মুহিত, সমীর মুহিত ও সামিনা মুহিত।
সাবেক এই রাজনীতিবিদ ২০১৪ সালে সিলেট-১ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শেষ বারের মতো অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। দক্ষতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে আর নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন।