সুন্দরবন থেকে নাভারন পর্যন্ত রেললাইনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুবিধার আওতায় আনতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সুন্দরবন থেকে যশোরের নাভারন পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের দাবি জানিয়েছে সাতক্ষীরাবাসী।
আজ বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক অরবিন্দ মৃধা বেশ কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
২৫ লাখ মানুষ অধ্যুষিত সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে সুন্দরবনকে সংযুক্ত করে এই প্রকল্প স্থাপনের ব্যাপারে সরকারে উদ্যোগ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেললাইন স্থাপনের এই প্রস্তাব গ্রহণ করে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে স্মারকলিপিতে।
জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির স্মারকলিপিটি গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের আইলায় বিধ্বস্ত দেশের দক্ষিণ উপকূলের মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে ২০১০ সালের ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নকীপুর হাইস্কুল মাঠে এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন। এ সময় তিনি আইলা উপদ্রুত মানুষের চাহিদা পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সুন্দরবনের মুন্সীগঞ্জ থেকে যশোরের নাভারন পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ছয়টি স্টেশন সমৃদ্ধ এবং দুটি রেলসেতু সমৃদ্ধ রেললাইন স্থাপনে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। এরপর থেকে বিষয়টি ফাইলবন্দি হয়ে আছে। রেললাইন স্থাপনে কোনো অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, রেললাইন স্থাপিত হলে সুন্দরবনের সম্পদ আহরণ এবং তা পরিবহণে ব্যাপক সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানির সিংহদ্বার সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা বাণিজ্য আরও জোরদার করা সম্ভব হবে। সামুদ্রিক মৎস্য ও চিংড়ি ছাড়াও বহু ধরনের মৎস্য সমৃদ্ধ একইসঙ্গে কৃষি ও ফল উৎপাদনে অগ্রসর এই জেলার সম্পদ দেশের বিভিন্ন ঘাটতি জেলায় পরিবহণের ক্ষেত্রে রেল যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অপরদিকে নাভারণ থেকে সুন্দরবনের মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত একটি মাত্র ব্যস্ত সড়ক যার ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। যানবাহনের জট কমাতে এবং যাত্রীসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে মুন্সীগঞ্জ-নাভারন রেল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো স্মারকলিপির কপি পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী ও রেলমন্ত্রী বরাবরও।