স্ত্রীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, পঞ্চম স্ত্রীর মামলায় যুবলীগনেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত যুবলীগনেতা শাহ ফয়েজউল্লাহ ফয়েজের আরও একটি বিয়ের খবর পাওয়া গেছে। নিশি আক্তার নামের এক নারী দাবি করেছেন, তিনি ফয়েজের পাঁচ নম্বর স্ত্রী এবং আরও দুই স্ত্রীর খবর তিনি জেনেছেন। এরই মধ্যে অন্য স্ত্রীদের মতো নিশিকেও যৌতুকের দাবিতে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। ওই ঘটনায় ফয়েজের বিরুদ্ধে নিশি ‘যৌতুক না পেয়ে মারধর’ এর অভিযোগে মামলা করেছেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ফয়েজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
নিশি আক্তার জানায়, দুই বছর আগে একটি অনুষ্ঠানে ফয়েজের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। মোবাইলে কথা হতো। পরে পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় এক লাখ টাকা কাবিননামা উল্লেখ করেন। তাদের তিন মাসের একটি সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি ফয়েজ, তার বোন মুন্নি ও সুমা মিলে নিশিকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর শুরু করে। গত ২৪ ডিসেম্বর মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং স্বেচ্ছায় তালাক না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
নিশি ওই ঘটনায় প্রথমে ফতুল্লা মডেল থানায় ও পরে আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলার আর্জি গ্রহণ করে ফয়েজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফয়েজ বলেন, ‘আমি তিনটি বিয়ে করেছি। নিশি তৃতীয় স্ত্রী। তাঁর আগেও বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরও পরকীয়া চালাচ্ছিল জানতে পেরে তাকে ডিভোর্স দেই। এখন আমার কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছে।’
ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পাওয়ার পর ফয়েজকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।’
এর আগে ২০২০ সালের ২৮ মার্চ শহরের জামতলা থেকে ফয়েজকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সেদিন বিকেলে পুলিশের জরুরি পরিষেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন কল পেয়ে ফয়েজের আরেক স্ত্রী আরোহী হাওলাদারকে (২২) আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ফয়েজকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার করেছিল।
শাহ ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ শহরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা। তিনি জেলা যুবলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক।
আরোহী হাওলাদার অভিযোগে উল্লেখ করেছন, বিয়ের পর থেকেই ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন চালাতেন। এরমধ্যে তাদের ঘরে একটি সন্তানও জন্ম নেয়। তারপরেও যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী ফয়েজ। পরবর্তীতে বাবার বাড়ি থেকে তিনি আট লাখ টাকা এনে ফয়েজের হাতে তুলে দেন। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে পুনরায় নির্যাতন করতে থাকেন। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ টাকার দাবিতে তাকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন চালান ফয়েজ। পরে তিনি ২৮ মার্চ ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।