বিএনপিকে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না পুলিশ

নরসিংদীতে বিএনপিকে কোনোভাবেই দাঁড়াতে দিচ্ছে না পুলিশ। দলটির একের পর এক সভা-সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পণ্ড বা ভণ্ডুল করে দিচ্ছে পুলিশ। এমনকি জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকেও নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটাচ্ছে।
জেলা বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গত ছয় মাসে নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ছোট-বড় ৫০টিরও বেশি সভা-সমাবেশ পণ্ড করেছে দিয়েছে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গ্রেপ্তার করেছে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নজরুল, সুমন ও বিএনপি নেতা নাহিদ, জামানসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৩০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে। পুলিশ জ্বালাও-পোড়াওসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাতটি মিথ্যা মামলা করে বলেও জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে শহরের চিনিশপুর কার্যালয় থেকে কালো পতাকা মিছিল বের হলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে মিছিলটি কিছু দূর এগোলে পুলিশ আবার বাধা দেয়। নেতাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও পুলিশ হামলা চালায় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খায়রুল কবির খোকন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, ফারুকউদ্দিন ভূইয়া, অ্যাডভোকেট বাছেদ ভূইয়া, গোলাম কবির কামাল, মহসীন হোসাইন বিদ্যুৎ, শাহেন শাহ শানু, আওলাদ হোসেন মোল্লা, নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা, অ্যাডভোকেট উম্মে সালমা মায়াসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘বিগত ছয় মাসে পুলিশ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ছোট-বড় ৫০টিরও বেশি সভা-সমাবেশ পণ্ড করেছে। অহেতুক মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলায় আমাদের ৩০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। জ্বালাও-পোড়াওসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় সাতটি মিথ্যা মামলা রুজু করেছে।’
খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে। তাই তারা পুলিশকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দিয়ে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ পণ্ড করে দিচ্ছে।’
বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা প্রসঙ্গে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলম বলেন, ‘তাদের কার্যালয়ের ভেতরে সভা-সমাবেশ করতে কোনো রকম বাধা দেওয়া হয়নি। আমার জানামতে মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টাকালে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মী পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে মানবিক দিক বিবেচনায় ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উচ্ছৃঙ্খলদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাত্র। এলোপাতাড়ি কোনো গ্রেপ্তার বা মামলা করা হয়নি।’