সব শুনেও মামলা প্রত্যাহার করতে বললেন নাছির

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে কর্মীদের করা মামলাগুলো আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যাহারের পরামর্শ দিয়েছেন নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
আজ শনিবার সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ২৩টি মামলার বাদীদের সঙ্গে এক সভায় এসব কথা বলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। সভায় এসব মামলার বাদী করপোরেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বক্তব্য শুনে সমাধানের আশ্বাস দেন মেয়র।
এ সময় সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. হোসেন, প্রধান নির্বাহী শফিউল আলম, সচিব রশিদ আহমেদ বক্তব্য দেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের শিক্ষা, রাজস্ব, প্রকৌশল সংস্থাপন শাখায় নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়নসহ বিভিন্ন কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২৩টি মামলা করেছেন। উচ্চ আদালতে করা এসব মামলার কারণে চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে করপোরেশনের নিয়োগ ও পদোন্নতি।
সভায় একটি মামলার বাদী দৌলত আজিম ভূঁইয়া বলেন, রাজস্ব কর আদায়কারী লাইসেন্স পরিদর্শক ও হিসাব সহকারী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা দুই দশক ধরে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। এ কারণে একই পদে থাকা ৪৬ জন রাজস্ব আদায়কারী চাকরি স্থায়ীকরণে হাইকোর্টে তিনটি মামলা করেছেন। মামলার আগে তিনি বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরের পরামর্শ নিয়েছেন বলেও সভায় জানান।
এ ছাড়া মামলা করে এসব পদের বিপরীতে লোক নিয়োগ বন্ধ রাখার জন্য একটি রিট মামলাও চলছে আদালতে। ২০১৪ সালে এসব মামলা করতে বর্তমান সচিব রশিদ আহমেদ বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ করেন মামলার বাদী লাইসেন্স পরিদর্শক দৌলত আজিম।
কাপাসগোলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক তাহেরা বেগমকে এমপিওভুক্ত তালিকা থেকে বাদ দেওয়া, ৮২ জন স্কুলশিক্ষককে বিএড স্কেল না দেওয়ায় উচ্চ আদালতে মামলা করেন শিক্ষকরা। সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি না পেয়ে ছয়জন উপসহকারী প্রকৌশলী উচ্চ আদালতে মামলা করেন।
বিলবোর্ড স্থাপনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা (এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক) আরশেদুল আলম বাচ্চুর করা মামলায় প্রকৃত তথ্য উচ্চ আদালতে উপস্থাপনে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মেয়র নাছির।
সিটি করপোরেশনের বকেয়া টাকার রসিদ উচ্চ আদালতে উপস্থাপন করে ব্যবসায়ীরা অবৈধ বিলবোর্ড রক্ষার চেষ্টা করছেন বলে জানান কর্মকর্তারা।
রাজস্ব কর্মকর্তা পদে স্থায়ীকরণ না করায় মামলা করেছেন শামসুল আলম। আগামী ছয় মাস পর তিনি চাকরি থেকে অবসর নেবেন। এ ছাড়া রাজস্ব বিভাগের ডিটিও পদে স্থায়ী ও পদোন্নতি না পেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেছেন দবির উদ্দিন নামের একজন।
২৩টি মামলার বাদীপক্ষের সব বক্তব্য শোনার পর মেয়র আ জ ম নাছির মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহার হলে সহানুভূতিশীল আচরণ করা হবে। প্রত্যাহার করা আপনাদের বিষয়। তবে করপোরেশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে সর্বোচ্চ সহানুভূতিশীল হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান মেয়র। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে মামলা চলমান রেখে নগরবাসীর সেবার মান নিশ্চিত করা সম্ভব না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে এক পরিবারের মতো কাজ করতে হবে। এ ছাড়া নগরীর অবৈধ সব বিলবোর্ড উচ্ছেদ করার নির্দেশ দেন মেয়র নাছির।
মেয়র বলেন, অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ করার পর নীতিমালা তৈরি করে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। আগামী অর্থবছরে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার বাজেট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বর্ষার শুরুতে খাল, নালা খনন ও পরিষ্কার এবং অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ অভিযান জোরদারের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া রাত ১টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে আবর্জনা অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।