দুজনকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে দিল গ্রাহকরা

জামালপুরের মাদারগঞ্জে দুজনকে গণপিটুনি দিয়ে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। গতকাল শনিবার (১৭ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার বালিজুড়ী বাজার থেকে মোকাদ্দেস হোসেন ও তার সহযোগী মিজানুর রহমান সুমনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। আজ রোববার বিকেলে তাদের জামালপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার মাদারগঞ্জ পৌর শহরের বালিজুড়ী বাজারে ‘আল আকাবা সমবায় সমিতি’র কার্যালয়ের নিচতলায় সমিতি কর্তৃক পরিচালিত ‘আল ওয়ান-এ’ নামের একটি তৈরি পোশাকের দোকান থেকে জামালপুর শহর জামায়াতের আমির মোকাদ্দেস হোসেন ও মিজানুর রহমান গোপনে কয়েক লাখ টাকার মালামাল সরানোর চেষ্টা করেন। এ সংবাদ পেয়ে সমিতির গ্রাহকরা তাদের মালামালসহ আটক করে ওই দোকানেই বেঁধে রাখে এবং গণপিটুনি দিয়ে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
মোকাদ্দেস হোসেন ও মিজানুর রহমান সুমনকে গণপিটুনি দিয়ে গলায় জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।
মোকাদ্দেস হোসেন জামালপুর শহর জামায়াতের আমির এবং মিজানুর রহমান সুমন জামায়াতের সমর্থক। শহর জামায়াতের আমির মোকাদ্দেস হোসেন দাবি করেন, দোকানে তার অংশীদারত্ব রয়েছে।
আল আকাবা সমবায় সমিতির গ্রাহক আজহারুল ইসলাম জানান, ওই সমিতির কয়েক হাজার গ্রাহকের ৭০০ কোটি টাকা আমানত আত্মসাৎ করে পালিয়েছে সমিতির পরিচালকরা। তারা উচ্চ হারে সুদের লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে এক বছর আগে অফিস বন্ধ করে গা-ঢাকা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল আউয়াল জানান, জামালপুর শহর জামায়াতের আমির মোকাদ্দেস ‘আল ওয়ান-এ’ নামক তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। সেই প্রতিষ্ঠানের মাদারগঞ্জ শাখায় মালামাল আনতে গেলে সমবায় সমিতির গ্রাহকরা তাকে আটক করে। তার সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়। কাউকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অধিকার কারও নেই। আর ওই সমিতির আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গেও জামায়াতের এই নেতা জড়িত নন। যারা জামায়াত নেতাদের সঙ্গে অন্যায় করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রত্যকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, শনিবার রাতে সমবায় সমিতির গ্রাহকরা দুজনকে থানায় সোপর্দ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।