শিগগিরই মুক্তি পাচ্ছেন না আরাফাত সানি

তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও নারী নির্যাতনসহ দুই মামলায় সহসায় মুক্তি মিলছে না ক্রিকেটার আরাফাত সানির। আজ বুধবার তাঁর আইনজীবী এম জুয়েল এ তথ্য এনটিভি অনলাইনকে জানান।
আইনজীবী জানান, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আরাফাত সানির বিরুদ্ধে করা তৃতীয় মামলাটির এজাহার থানা থেকে আদালতে এসেছে। ফলে এখন এ মামলায়ও সানি আসামি হলেন। তাঁকে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা যেকোনো সময় গ্রেপ্তার দেখাতে পারেন। তিনি আরো বলেন, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সানির বিরুদ্ধে করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ওই দিন সানি জামিন পেলেও নারী নির্যাতনের মামলায় জামিন নিতে হবে। তা না হলে সানি কারাগারেই থাকবেন।
এদিকে, আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে নথি পাঠান। ঢাকা মহানগর হাকিম কামরুল হাসান মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগে ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলা করেন নাসরিন সুলতানা।ওই দিন বিচারক মামলাটিকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন।
এদিকে, গত ২২ জানুয়ারি রাজধানীর আমিনবাজার এলাকা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা প্রথম মামলায় আরাফাত সানিকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। তাঁকে পরে ঢাকার মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই একদিনের রিমান্ডে পাঠান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁরা দুজন ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার শুরু করেন। সংসার চলার সময় ছয় মাস পর ক্রিকেটার আরাফাত সানি তাঁর মায়ের পরামর্শে নাসরিনের কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য সানি তাঁর স্ত্রীকে মারধর করেন এবং গালিগালাজ করে ভাড়া বাসায় ফেলে যান।
আরো জানা যায়, ২০১৬ সালের ১২ জুন বাদী নাসরিন সুলতানা ভাড়া বাসাসহ যাবতীয় ভরণ-পোষণ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে সংসার করতে স্বামী সানির সঙ্গে দেখা করেন।
এ সময় আরাফাত সানি যৌতুকের ২০ লাখ টাকা দাবি করে নাসরিনকে বলেন, ‘যৌতুকের টাকা না দিলে আমার মা তোমার সঙ্গে সংসার করতে দেবেন না এবং এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার পরিণতি অনেক খারাপ হবে। কারণ তোমার কিছু অশ্লীল ছবি আমার মোবাইল ফোনে রয়েছে।’ এরপর বাদীকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সানির মা তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন, তোর সঙ্গে আমার ছেলে সংসার করবে না তাই সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যবস্থা কর। তখন বাদী তাঁর বাসায় চলে যান।
এ ছাড়া বাসায় অবস্থানকালে আরাফাত সানি দুজনের কিছু আপত্তিকর ছবি ফেসবুকের মেসেঞ্জারে পাঠান। ছবি পাঠিয়ে আরাফাত সানি হুমকি দেন যে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তার পরিণতি আরো খারাপ হবে। পরে ২৫ নভেম্বর আবার তার মেসেঞ্জারে আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে হুমকি দেন আরাফাত সানি।