সিফাত হত্যা মামলার রায় আজ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সিফাত হত্যা মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হবে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি মাহবুব আহমেদ বলেন, আলোচিত এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৩২ জনের মধ্যে ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করছেন স্বজনসহ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ মামলার আসামিরা হলেন সিফাতের স্বামী মোহাম্মদ আসিফ প্রিসলি, শ্বশুর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন রমজান, শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলী এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সাবেক চিকিৎসক জোবাইদুর রহমান। এর মধ্যে নিহতের স্বামী আসিফ কারাগারে ও বাকি আসামিরা জামিনে আছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন রমজানের বাড়িতে ওয়াহিদা সিফাতের মৃত্যু হয়। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। সিফাত আত্মহত্যা করেছে বলে প্রথমে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন দাবি করলেও আদালতের নির্দেশে রংপুর মেডিকেল কলেজের তিন সদস্যের বোর্ড দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আঘাতজনিত কারণে সিফাতের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে।
এ ঘটনায় মহানগরীর রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা করেন সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা এ মামলায় যৌতুকের দাবিতে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। বাদীপক্ষের আবেদনে গত বছরের ১২ জুলাই মামলাটি রাজশাহী থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩-এ স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে গত বছরের ২৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আহমেদ আলী চারজনের বিরুদ্ধে রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আলোচিত এ মামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করে সিফাতের ছোট ভাই কে এম আসিফ-উল-ইসলাম বলেন, আদালতের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
সিফাতের সহপাঠী মেহেরুল সুজন বলেন, ‘প্রথম থেকেই এ হত্যাকাণ্ডকে বিভিন্নভাবে আত্মহত্যা বলে চালানোর অপচেষ্টা ছিল আসামিপক্ষের। কিন্তু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের মাধ্যমে জানা যায়, আত্মহত্যা নয়, আঘাতজনিত কারণে সিফাতের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা আদালত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ রায় প্রদান করবেন।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ বকুল বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে আসছি। আমরা চাই, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবেন আদালত।’