পথচারীদের ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের দখলে

মোংলা পোর্ট পৌরসভার অধিকাংশ ফুটপাথ দখল করে চলছে ব্যবসা। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। বছরের পর বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও স্থায়ীভাবে ফুটপাথ দখলমুক্ত করার জন্যে পৌর কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে না কোনো কার্যকরী ভূমিকা।
মোংলা পোর্ট পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ১ ডিসেম্বর এ পৌরসভা গঠন করা হয়। পর্যায়ক্রমে পৌর এলাকার বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। ২০১২ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
বর্তমানে মোংলা পৌর এলাকায় বিভিন্ন সড়কে চার শতাধিক দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর অধিকাংশ দোকানই ফুটপাথ দখল করে রয়েছে। পৌর শহরের শেখ আবদুল হাই সড়ক, মরহুম শফি কমিশনার সড়ক, বিএলএস রোড, মাদ্রাসা রোড, তাজমহল রোড, চৌধুরী মোড়সহ বিভিন্ন কাঁচামাল, মাছ, মাংস ও মুদি বাজার সংলগ্ন সড়কগুলোর ফুটপাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে রেখেছে। কেউ বেঞ্চ বসিয়ে আবার কেউ তাদের দোকানের মালামাল ফুটপাথের উপর রেখে পুরো ফুটপাথ দখল করে রেখেছে। অন্যদিকে পৌরসভার চৌধুরী মোড়ে গোটা দশেক ফলের দোকান পুরো ফুটপাথ আটকে বেচা-কেনা করছে।
পৌরসভার শেহালাবুনিয়া এলাকার কয়েকজন গৃহিণী জানান, এমনিতেই পৌরসভার রাস্তাগুলো চওড়া কম। ভ্যান, নছিমন আর মোটরসাইকেল রাস্তার উপরে রাখা থাকে সবসময়। ফুটপাথে হাঁটার উপায় নেই। ফুটপাথগুলো দোকানিরা দখল করে রেখেছে। ফলে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে চলাচলে দারুণ সমস্যায় পড়তে হয়।
মোংলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘ফুটপাথ দুরের কথা, চৌধুরী মোড় ও বাজার এলাকায় সকালে রাস্তা দিয়ে হাঁটার কোনো উপায় থাকে না। পৌর কর্তৃপক্ষ যদি পৌরবাসীর স্বার্থ না দেখে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখেন তাহলে আমরা যাব কোথায়? দিনের পর দিন এমন চলে আসলেও পৌর কর্তৃপক্ষ ফুটপাথ উচ্ছেদমুক্ত করতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থাই গ্রহণ করে না। প্রথম শ্রেণির পৌরসভার নাগরিক হয়ে আমরা সেই মানের সুবিধা চাই।’
ফুটপাথ দখল করে রাখা কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দোকানের জায়গা সীমিত। ফলে বাধ্য হয়েই দোকানের সামনের ফুটপাথে আমাদের মালামাল রাখতে হয়। তবে ফুটপাথ আটকে রেখে ঠিক কাজ করছেন না বলেও স্বীকার করেন তাঁরা।
ফলবিক্রেতা জাহিদ শেখ জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ সরে যেতে বললে সরে যান তাঁরা। পরে আবার জীবিকার তাগিদে তাঁদের ফিরে আসতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র জুলফিকার আলী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে মাইকিং করে ফুটপাথে বসা দোকানিদের ফুটপাথ ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেই। ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে এক-দুই মাস পর পর অবৈধ দোকান উচ্ছেদও করি। এটি আমাদের চলমান প্রক্রিয়া। জনগণের অসুবিধা করে আমরা কোনোভাবেই ফুটপাথ দখল করে রাখতে দেব না। খুব শিগগিরই আমরা আবার ফুটপাথ দখলমুক্ত অভিযান শুরু করব।’