ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠাই নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ
বিগত রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশনের ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠাই নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে অভিমত দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নির্বাচন কমিশনের সাবেক সদস্য ও বিশিষ্টজনরা এমন অভিমত দেন। সভায় সুজনের পক্ষ থেকে ১৯টি চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা বলেন, ‘নতুন কমিশনের প্রধান কাজ হবে জনগণের আস্থা অর্জন করা। নতুন কমিশনের উচিত হবে রকীব কমিশন অহেতুক যেসব পরিবর্তন এনেছে তা ঠিক করা।’ এ সময় তিনি বিগত কমিশনের সময়ে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) চলমান না রাখা ও ইসি কর্মকর্তাদের নিয়োগসংক্রান্ত বিধানের পরিবর্তনের সমালোচনা করেন।
ড. শামসুল হুদা বলেন, ‘নিধিরাম সর্দার হতে গেলে ঢাল-তলোয়ার লাগবে, কর্মী বাহিনী লাগবে। ওখানে তাদের ডাউনগ্রেড করে ডেমোনাইজ করে আপনি এখন ডেপুটেশনে লোক আনার ব্যবস্থা রাখছেন। ইভেন ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসারও ডেপুটেশনে আনা যাবে, যেটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
সাবেক এই সিইসি আরো বলেন, ‘কমিশন এবং কমিশনের কর্মকর্তা যাঁরা, তাঁদের কথাবার্তায়, কাজকর্মে জনগণের মনে আস্থার সৃষ্টি হতে হবে। যে না, এই লোকগুলো কোনো দলবাজি করছে না, যেটা উচিত সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। সেই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
আলোচনায় সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘একটা ইলেকশন কমিশন বা একটা সিস্টেমের ওপরে মানুষের যখন বিশ্বাস হটে যায়, তখন ভালো কিছু আশা করা তার পক্ষে খুব দুরূহ হয়ে যায়। যদি সেই ইনস্টিটিউশনটি প্রপারলি (সঠিকভাবে) পরিচালিত না হয়। কাজেই প্রথম চ্যালেঞ্জ এই নির্বাচন কমিশনের সামনে হচ্ছে সেই বিশ্বাসযোগ্যতাকে ফিরিয়ে আনা।’
লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের সামনে দুটি বিকল্প আছে। সেই বিকল্প হলো- একটা সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে তাঁরা প্রশংসিত হয়ে ইতিহাসে একটা জায়গা করে নেবেন। আর দ্বিতীয়টি হলো তাঁরা অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে ইতিহাসের কাছে কলঙ্কিত হবেন।’
সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘তাঁরা (নির্বাচন কমিশন) সফল না হলে তাঁরা যেমন দায়ী হবেন, ঠিক তেমনিভাবে দায়ী হবেন সরকার এবং যে অনুসন্ধান কমিটি তাঁদের খুঁজে বের করেছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না, চারজন লোক, পাঁচজন লোক বা তিনজন লোকের পক্ষে সমস্ত প্রতিকূলতাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।’