নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/06/13/photo-1434186459.jpg)
নারীদের যৌন হেনস্তা ও ধর্ষণের বহু ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। এসব ঘটনার বিচার না হওয়া নিয়ে প্রতিনিয়তই হচ্ছে মিছিল-মিটিং। ব্যবস্থা নিতে না পরায় অভিযোগ উঠছে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও। সেই পুলিশেরই এক সদস্য রাজধানীতে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই কনস্টেবলের বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঢামেকের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই নারী তাঁদের বলেছেন, তাঁর সাবেক স্বামী ও তাঁর কয়েকজন সহযোগীর মাধ্যমে তিনি ধর্ষণের শিকার হন। তাঁর পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার পরই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওই নারী পুলিশ সদস্য তুরাগ থানায় কর্মরত। আর তাঁর সাবেক স্বামী খিলগাঁও থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)।urgentPhoto
নারী পুলিশ সদস্যের ভাই জানান, ২০১১ সালে তাঁর বোনের বিয়ে হয় ওই এএসআইয়ের সঙ্গে। ২০১৪ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। তাদের ঘরে এক সন্তানও রয়েছে। গত ১০ জুন বিকেল ৪টার দিকে এএসআই ফোন করে তাঁর বোনকে সব ঝামেলা মিটিয়ে নতুন করে সংসার করার কথা বলে। পরে তাঁর বোন কথামতো সেদিনই ওই তাঁর বাসায় গেলে তিনি ও তাঁর সহযোগী মিলে তাঁর বোনকে ধর্ষণ করেন।
পুলিশ সদস্যের ভাই আরো জানান, এর পরের দিন উদ্ধার হয়ে খিলগাঁও থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ। এরপর ১২ জুন রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি হলে ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য তাঁকে আজ শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নারী পুলিশ সদস্যের বোন বলেণ, “ওকে ওখান থেকে কী বলে খিলগাঁও নিয়ে গেছে। খিলগাঁও নেওয়ার পরে বলতেছে, ‘তুমি আসছোই যখন বাচ্চাটার সাথে একটু দেখা করো’। তখন ও বললো, ‘না আমি বাসায় যাবো না, তুমি তাইলে খিলগাঁও থানায় নিয়ে আসো, আমি খিলগাঁও থানায় গিয়ে বাচ্চা দেখবো। তোমার বাসায় যাবো না’। তখন সে আমার বোনের সাথে তার শাশুড়ির সাথে কথা বলাইছে। ওর ভাসুরের সাথে কথা বলাইছে যে, ‘বাসায় আসো অসুবিধা নাই। মাইসা বাসায় আছে’। তখন ওকে জানি কী খাওয়াইছে, কী করছে ওর আর সেন্স নাই। একপর্যায়ে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে, সাথে আরও চারজন ছিল সিভিলের...।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক ওই নারী পুলিশ সদস্যের হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের যে এএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
সম্প্রতি রাজধানীতে কয়েকটি যৌন হেনস্তা ও ধর্ষণের ঘটনায় বিভিন্ন মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গত পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকাসহ একই দিনে দেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে নারীদের হেনস্তার ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটজনের ছবি প্রকাশ করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে রাজধানীতে ঘটল মাইক্রোবাসে আদিবাসী নারী গণধর্ষণের ঘটনা। গত ২১ মে রাত ১০টার দিকে কাজ শেষে ওই তরুণী যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে উত্তরায় বাসায় ফিরতে বাসের জন্য একটি সিএনজি স্টেশনের কাছে অপেক্ষা করছিলেন। ওই সময় একটি মাইক্রোবাস তার সামনে এসে থামে।
মাইক্রোবাস থেকে দুই যুবক নেমে এসে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুখ চেপে ধরে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। গাড়িতে তুলেই তাঁর মুখ ও হাত-পা বেধেঁ ফেলে। এরপর গাড়িটি বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকে। গাড়ির ভেতরে পাঁচজন পর্যায়ক্রমে তাঁকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময়ও তাঁকে ধারালো অস্ত্রের মুখে ঠেকিয়ে রাখা হয়। মধ্যরাতে উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়।